
জীবন আপনার, তাই ভালোমন্দের দায়ও আপনার। তবে কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জীবনের কিছু বিষয় শেয়ার করা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সহকর্মীরা যতই ঘনিষ্ঠ হোন না কেন, সব কথা বলা একেবারেই উচিত নয়।
আমরা সবাই জানি, দিনের অন্তত ৮ ঘণ্টা আমাদের অফিসে কাটে। সেই সময় সহকর্মীদের সঙ্গে নানা ধরনের আলাপ হয়, কেউ কেউ তো সময়ের সঙ্গে হয়ে ওঠেন বন্ধুও। তবে মনে রাখতে হবে, সহকর্মী আর বন্ধু এক নয়।
সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক কর্মস্থলে একটি পজিটিভ পরিবেশ তৈরি করে, তবে সেই সম্পর্কের একটা সীমারেখা থাকা জরুরি। পেশাদার পরিবেশে অতিরিক্ত খোলামেলা আলোচনা অনেক সময় আপনাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিতে পারে।
যে কথাগুলো সহকর্মীদের বলা উচিত নয়:
১. অন্য সহকর্মীর সমালোচনা:
অফিসে কারও পেছনে সমালোচনা বা গসিপ করা কখনই উচিত নয়। এতে আপনি সহকর্মীদের চোখে নেতিবাচক হয়ে উঠবেন। অন্যের প্রতি আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে, তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি।
২. অপেশাদার রসিকতা বা কটাক্ষ:
সহকর্মীদের সঙ্গে হাসি-মজা করা ঠিক আছে, তবে অপমানজনক বা অশালীন রসিকতা এড়িয়ে চলাই উত্তম। তা না হলে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পাশাপাশি, অফিস পরিবেশও নষ্ট হতে পারে।
৩. ভবিষ্যৎ চাকরির পরিকল্পনা:
অন্য কোথাও চাকরির চেষ্টা করছেন বা ইন্টারভিউ দিয়েছেন এই তথ্য সহকর্মীদের জানালে আপনাকে নিয়ে অফিসে নেতিবাচক গুঞ্জন তৈরি হতে পারে। এতে বর্তমান পদে আপনার গ্রহণযোগ্যতা ও অবস্থান দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
৪. পরনিন্দা-পরচর্চা থেকে দূরে থাকুন:
সব সহকর্মী আপনার পছন্দ হবেন না, কথাকাটাকাটিও হতেই পারে। তবে তাই বলে অন্যদের সামনে কাউকে ছোট করা, বা বস ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে নেতিবাচক কথা বলা আপনার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
৫. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
আপনার ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, যেমন কবে চাকরি ছাড়বেন, কোন ফিল্ডে যেতে চান বা কোথায় সেটেল হতে চান এসব কথা সহকর্মীদের বলা উচিত নয়। তারা যতই আপনজন মনে হোক না কেন, এই তথ্য থেকে অনেক ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে।
৬. আর্থিক অবস্থা:
আপনার আয়, ব্যয়, সঞ্চয় ইত্যাদি বিষয় অফিসে কখনও আলোচনা করবেন না। এটি হয়তো কাউকে হিংসুক বা সন্দেহপরায়ণ করে তুলতে পারে, আবার কেউ আপনাকে অন্যরকমভাবে বিবেচনাও করতে পারে।
পেশাদার জীবন আর ব্যক্তিগত জীবন এই দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান রাখা একজন সচেতন কর্মীর দায়িত্ব। তাই সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলেও ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ে সতর্কতা মেনে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, অফিসের পরিবেশ যতটাই বন্ধুত্বপূর্ণ হোক, এক মুহূর্তেই সেটি আপনার বিরুদ্ধে যেতে পারে।
মিমিয়া