ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

থানায় অভিযোগ দিয়েও দফায় দফায় হামলার শিকার পরিবার, আহত ৭

শাহআলম মিয়া, মিঠাপুকুর, রংপুর।।

প্রকাশিত: ১৮:৪৮, ১৩ জুন ২০২৫

থানায় অভিযোগ দিয়েও দফায় দফায় হামলার শিকার পরিবার, আহত ৭

রংপুরের মিঠাপুকুরে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও এক পরিবারের উপর বারবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ একাধিকবার ফোন করেও পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ি গ্রামে দ্বিতীয় দফায় হামলার শিকার হন ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা। এর আগে বুধবার (১১ জুন) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে প্রতিপক্ষ এমদাদুল হক গং লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রথম দফায় হামলা চালায়। এতে সাতজন আহত হন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ, মোশাররফ হোসেন ও শাহাদাত হোসেন ১৯৮২ সাল থেকে ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত একটি সম্পত্তিতে বসবাস করে আসছেন। তিন মাস আগে হঠাৎ করেই ঐ জমির মালিকানা দাবি করেন এমদাদুল হক গং।

গত ১০ জুন সকাল ১০টায় শাহাদাত ও মোশাররফ হোসেন নিজ জমিতে রোপণকৃত কদম গাছ কাটতে গেলে এমদাদুল হকের নেতৃত্বে ৭-৮ জন দেশীয় অস্ত্রসহ বাধা দেন এবং জমিটি নিজেদের বলে দাবি করেন। এরপর থেকেই প্রতিনিয়ত বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকি ও মারধরের আশঙ্কায় ভুক্তভোগীরা নিরাপত্তা চেয়ে মিঠাপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ১১ জুন সকাল থেকে এমদাদুল গং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই হাফিজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ঘটনাস্থলে যাননি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

একপর্যায়ে ১১ জুন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে এমদাদুল হক, সাদেকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, এরশাদুল মিয়া, নাসির উদ্দিন, আশিক মিয়া, মোছাঃ নাজমিন বেগম, রাশেদা বেগম, ফয়জুর রহমান, রাজিব মিয়া ও আঙ্গুরা বেগম দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, লোহার রড ও ধারালো ছুরি নিয়ে শাহাদাত হোসেনের বাড়ির উঠানে হামলা চালায়। তারা শাহাদাত হোসেন, শরিফুল ইসলামসহ সাতজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এর মধ্যে চারজনকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “আমি থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। হামলার সময় বারবার ৯৯৯-এ ফোন করলেও কেউ আসেনি। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই প্রতিপক্ষ আবারও হামলা চালিয়েছে। এখন শুনছি তারা গুন্ডা ভাড়া করে আমাদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে।”

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “ঘটনার বিষয়ে শাহাদাত হোসেন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সজিব

×