
ছবি: সংগৃহীত
বন্ধুমহল ব্লাড ডোনার সোসাইটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) চট্টগ্রামে মহা আড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি বলেন, “কবরে যখন ফেরেশতা আমাদের প্রশ্ন করবেন তুমি দুনিয়ায় কতো সময় ব্যয় করে এসেছো? তখন আমরা দুনিয়ার এই ৬০ বা ৭০ বছরকে বলবো আমি এক দিন ছিলাম দুনিয়ায়। ফেরেশতা চলে যেতে থাকবে তখন বলবো আমি এক দিন ছিলাম না দুনিয়ায়। আমি দুনিয়ায় একটা বিকাল ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “তখন ফেরেশতা আবার চলে যেতে থাকবে। তখন আবার আমরা তাঁকে ডেকে বলবো দুনিয়ায় আমি যে সময় ছিলাম তা কবরের তুলনায় বড়জোর এক ঘণ্টা হতে পারে। আমার এই কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের পরকালের যেই জীবনটা, এই জীবনটা অনেক বড়। যে জীবনের শুরু আছে, শেষ নাই।”
শিশির তাঁর বক্তব্যে দুনিয়ার জীবনের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “দুনিয়ার জীবনটা এতো সংক্ষিপ্ত যে সেটা পরকালের এক ঘণ্টা। এই এক ঘণ্টার জীবনটাকে আমার ভালো কাজ দিয়ে পরিপূর্ণ করতে হবে। সেদিক থেকে আমি মনে করি, স্বেচ্ছায় রক্তদান এর থেকে মহৎ কাজ এই দুনিয়ায় আর হয় কি না আমার সন্দেহ।”
তিনি তাঁর বক্তব্যে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেন।
এছাড়া বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, “কুমিল্লা যেমন রসমালাইয়ের জন্য বিখ্যাত, ঠিক তেমনি মাদকের জন্যও আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর দায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের যেমন আছে, তেমনি আমাদের প্রশাসনেরও। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এখন সময়ের দাবি।”
তিনি আরও বলেন, “বন্ধুমহল ব্লাড ডোনার সোসাইটির মতো সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। যারা নিয়মিত রক্তদানে অংশ নেয়, তারা মাদকের সাথে জড়াতে পারে না। এটাই তাদের মানবিক দায়বদ্ধতার প্রমাণ।”
সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসান বলেন,
“রক্তের বন্ধনের বাইরে, রক্তদানের মাধ্যমে আমাদের একটি নতুন বন্ধন তৈরি হয়। সেই বন্ধনের শক্তিতে আমরা গড়ে তুলতে পারি একটি মানবিক সমাজ। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ উপেক্ষা করে যারা নিঃস্বার্থভাবে রক্ত দেন—তাঁদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।”
দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বলেন, “রক্তদান একটি মহৎ কাজ। আমাদের সন্তানরা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে দেশের জন্য রক্ত দিতে দ্বিধা করেনি। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যেন আর কাউকে রাস্তায় রক্ত ঝরাতে না হয়—এরকম সুন্দর একটি বাংলাদেশ গঠন করা হোক।”
সম্মেলনে বন্ধুমহল ব্লাড ডোনার সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবী, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন। দিনব্যাপী এ আয়োজনে রক্তদানের মানবিক আবেদন, সমাজে সচেতনতা তৈরি এবং তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।
আবির