ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নবীনগরে বিপ্লব ঘটাচ্ছে ‘বিনাতিল-২’, তেলের ঘাটতি পূরণে কৃষকের নতুন আশার

ফরিদ আহমেদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ২১:২০, ২৭ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:২২, ২৭ মে ২০২৫

নবীনগরে বিপ্লব ঘটাচ্ছে ‘বিনাতিল-২’, তেলের ঘাটতি পূরণে কৃষকের নতুন আশার

তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনার নাম এখন ‘বিনাতিল-২’। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত এই উচ্চফলনশীল তিলের জাত।

আদিকাল থেকেই সরিষা ও তিল ছিল এ অঞ্চলের কৃষিজ উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন পাচ্ছিলেন না। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল এমন একটি তিলের জাতের, যা খরা ও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে সক্ষম হবে। সেই প্রত্যাশা পূরণ করেই মাঠে সফলভাবে অবস্থান নিয়েছে বিনাতিল-২

নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ১৫৫ হেক্টর জমিতে বিনাতিল-২ চাষ হয়েছে। সাধারণত খরিপ মৌসুমে এই জাতটি বেশি ফলন দেয়, কারণ শুরুতে আবহাওয়া শুষ্ক এবং শেষদিকে কিছুটা বৃষ্টিপাত হয়, যা এ জাতের জন্য উপযোগী।

পৌরসভা ব্লকের কৃষক সুধন মিয়া বলেন, “তিল গাছের বৃদ্ধি খুব ভালো। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভালো ফলন হবে।”
সুহাতা গ্রামের কৃষক নাছির উদ্দিন বলেন, “এ বছর বৃষ্টি তুলনামূলক কম হলেও এই জাতের তিল চমৎকারভাবে ফুল ও ফল দিচ্ছে। আমরা বহুদিন ধরে এমন জাতের অপেক্ষায় ছিলাম।”

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, “বিনাতিল-২ জাতটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—এটি কালো বীজের, জলাবদ্ধতা ও খরা সহিষ্ণু। খরিপ মৌসুমে যখন অন্যান্য জাতের ফলন কমে যায়, তখন এই জাতটি ভালো ফলন দেয়। এতে প্রায় ৪০-৪৫% তেল থাকে, যা দেশীয় সাধারণ তিলের তুলনায় দ্বিগুণ। এছাড়া এর জীবনকাল মাত্র ৮০-৯০ দিন। ফলে এটি কৃষকদের জন্য দ্রুত আয় ও পুষ্টির উৎস হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “বিনাতিল-২ চাষে পতিত জমিকে উৎপাদনশীল করা যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশীয় ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই জাতটি।”

নবীনগরের মাঠে এখন সবুজ তিল গাছ আর তার ফুলে-ফলে কৃষকের মুখে হাসি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহায়তায় দিন দিন বাড়ছে আগ্রহ।

মিমিয়া

×