
মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রতিবন্ধী শাহজাহান আলী ও তাজুল ইসলাম
এক সময় ছিলেন সার্কাসের তারকা। এখন জীবন তার কাছে এক দুর্বিষহ যন্ত্রণার নাম। ভাত-তরকারির হিসাব কষতে কষতে ক্লান্ত প্রতিবন্ধী শাহজাহান আলীকে এখন পরিবার নিয়ে ভরসায় থাকতে হয় সাহায্যের আশায়। শাহজাহান আলীর (৫২) বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা কুটিচন্দ্রখানা গ্রামে। মাত্র ৪২ ইঞ্চি উচ্চতার এই মানুষটি দীর্ঘ ১৭ বছর সার্কাস ও যাত্রাপালায় অভিনয় করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। কিন্তু সার্কাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার জীবন যেন থমকে গেছে। পরিবারে আয়ের একমাত্র উৎস এখন তার প্রতিবন্ধী ভাতা ও বাড়ির পাশে ছোট একটি মুদি দোকান।
দোকান চালান তার ৩৬ ইঞ্চি উচ্চতার ছেলে তাজুল ইসলাম, যিনি নিজেও একজন প্রতিবন্ধী। দোকান থেকে দৈনিক আয় মাত্র ১০০-১৫০ টাকা, যা দিয়ে ন্যূনতম খাবার জোটানোই কঠিন। ঈদ সামনে, কিন্তু সন্তানের জন্য নতুন জামা কিনে দেওয়ার স্বপ্ন এখন বিলাসিতার মতো মনে হচ্ছে শাহজাহানের কাছে। শাহজাহান বলেন, সারাদিন দোকানে বসেও বিক্রি হয় না কিছুই। সংসার চালাই কীভাবে! ঈদে সন্তানের জামা কিনে দিতে পারব কি না জানি না। দীর্ঘ অভাব-অনটনে ক্লান্ত শাহজাহান জানান, বাবা জীবিত থাকলেও খোঁজ নেয় না।
স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তাঁর জীবন এখন মানবেতর। দুই মেয়েকে কষ্ট করে বিয়ে দিয়েছেন, ছেলে তাজুল পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে মেধা ও সংকল্পে, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতায় দিন দিন থমকে যাচ্ছে তার ভবিষ্যৎ। তাজুল ইসলাম জানায়, আমার নিজের ভাতা থাকলে বাবাকে একটু সহায়তা করতে পারতাম। নতুন জামা কিনতেও পারতাম। স্থানীয়দের দাবি, পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছে। প্রয়োজন সরকারি সহায়তা ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, তাজুল ইসলামের প্রতিবন্ধী ভাতার বিষয়ে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি পরিবারটিকে অন্যান্য সরকারি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।