ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন!

জাহিদ হাসান মাহমুদ মিম্পা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২৭ মে ২০২৫; আপডেট: ২০:৪৭, ২৭ মে ২০২৫

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন!

ছবিঃ সংগৃহীত

জ্যৈষ্ঠর অতিবৃষ্টিতে শতবিঘা জমির পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে দিশেহারা চাঁপাইনবাবঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। সোনার ফসল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চোখে-মুখে হতাশা আর চরম দুশ্চিন্তায় এ অঞ্চলের কৃষকদের।

অতিমাত্রায় বৃষ্টির কারণে জমিতেই ভাসছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি পাকা ধান। একদিকে, এসব ধান পানিতে তলিয়ে পচে নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, চাহিদা মতো মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টিতে মাঠে পাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধানের সঙ্গে ডুবছে কৃষকের স্বপ্নও। কেউ হাঁটু পানিতে নেমে ধান কাটছেন। আবার কেউ কাটা ধান উঁচু স্থানে তুলছেন। আবার কেউ কাটা ধানগুলো পানিতে ভাসমান অবস্থায় ছড়িয়ে থাকা একত্র করছেন।

বৃষ্টির মধ্যে অনেক কৃষক পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এখন ধান কাটার মৌসুম শেষের দিকে। তারপরও অনেক কৃষক ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে পারেননি। আর দুই-এক সপ্তাহ সময় পেলে ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারতেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান, একদিকে শ্রমিক সংকট, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া। দুয়ে মিলে যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষেতে কেটে রাখা ধানও বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। অন্যদিকে, কাটা ধান মাড়াইয়ের পর ভেজা ধান শুকানো নিয়েও রয়েছে দু:শ্চিন্তা। বৃষ্টির কারণে বাড়ির উঠানেও কাঁদা হয়ে আছে। সড়কেও ধান শুকাতে পারছেন না তারা।

কৃষক আলী হোসেন বলেন, নয় বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। এরমধ্যে দুই বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছি। বাকি সাত বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় ধান কাটা যাচ্ছে না। ধানের জমিতে এখন হাঁটু-কোমর সমান পানি। 

আনারুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক বলেন, দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে গেছে। এতে জমিতেই ধানের বীজ গজাতে শুরু করেছে। 

বৃষ্টির পানিতে তিন বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে কৃষক মোস্তাফিজুর রহমানের। তিনি বলেন, এসব ধানে বীজ গজাতে শুরু করেছে, তাই বাজারে বিক্রি হবে না। কারণ এসব ধানের চালে গন্ধ হতে পারে। এসব ধানের বীজও হবে না। তাই ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. ইয়াসিন আলী বলেন, কয়েকদিনে জেলায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে জেলা সদর, নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাটের বেশ কিছু জমির ধান নষ্ট হয়েছে। খুব শিগগির ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। প্রণোদনার মাধ্যেমে তাদের সহায়তা করা হবে।

ইমরান

×