ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বেড়েছে ‘স্ক্যাবিস’ সংক্রমণ 

বেলাল হোসেন রিয়াজ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২৫ মে ২০২৫

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বেড়েছে ‘স্ক্যাবিস’ সংক্রমণ 

ছবি: সংগৃহীত।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বাড়ছে খোসপাঁচড়া ও চর্মরোগ। এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে নাঙ্গলকোটের প্রতিটি গ্রামে। সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে গেলে দেখা যায় খোসপাঁচড়া ও চর্মরোগের অসংখ্য রোগী। দিন দিন “স্ক্যাবিস” বা “খোসপাঁচড়া” রোগীর সংখ্যা প্রতিটি গ্রামে বেড়ে চলছে। গ্রাম থেকে শহরে ছোঁয়াচে রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে  যা খুবই কষ্টদায়ক। এই রোগ দ্রুত নাঙ্গলকোটসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে ও ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে সবার মাঝে। আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে শরীরের কিডনি পর্যন্ত নষ্ট করে দিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। 

এই রোগের আক্রান্ত হেসাখাল ইউপির পাটোয়ার গ্রামের বাসিন্দা শিশু মেজবাহুল ইসলাম। তার হাত-পা ছেয়ে গেছে ছোট লাল র‌্যাশে। তার মায়ের সাথে চিকিৎসা নিতে এসেছে নাঙ্গলকোট পদ্না হাসপাতালে। 

মেজবাহউল ইসলামের পিতা বেলাল হোসেন মজুমদার বলেন, “তিন ছেলে ও স্ত্রীসহ পরিবারের সবাই এই রোগে আক্রান্ত। প্রথমে তার মা আক্রান্ত হয় । এরপর তার শরীর ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে ছোট ছেলে মেজবাহউল ইসলাম এর পর বড় ছেলে রিজোয়ান সহ পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের শরীরে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। হাত-পায়ে শুরুতে ছোট ছোট ঘামাচির মত দেখা দেয়। তীব্র চুলকানি দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গেলে চিকিৎসক এটিকে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিসের কথা বলেন। তবে চিকিৎসা নেওয়ার পরও কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না। পরিবারের সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছে।”

নাঙ্গলকোট সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, উপজেলার জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চর্মরোগের চিকিৎসা নিতে যাওয়া অধিকাংশ রোগী স্ক্যাবিসে আক্রান্ত। তবে শুরুতে শিশুদের মধ্যে থাকলেও এখন সব বয়সীরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগীর সংস্পর্শে যাওয়ার পাশাপাশি তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকেও ছড়াতে পারে ভয়াবহ এই চর্মরোগ।” 

চিকিৎসকরা আরো জানান, “এটি ঘামাচির দানা থেকে তীব্র চুলকানি দেখা দেয়। শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে ভাঁজে যেমন দুই আঙুলের ফাঁক, কোমর, ঘাড়, নিতম্বে, যৌনাঙ্গে, হাতের তালুতে, কবজিতে, বগলের নিচে, নাভি ও কনুইয়ে এ রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত চিকিৎসা না নিলে নানা জটিল রোগসহ কিডনির ক্ষতি করে দিতে পারে।” 

এ রোগের চিকিৎসক ডাক্তার কলিমুল্লাহ বলেন, “এ রোগটি বর্তমানে মহামারি হিসাবে দেখা দিয়েছে। তবে স্ক্যাবিস ও চর্মরোগটি চিকিৎসা নিরাময়যোগ্য। এর সংক্রমণ ঠেকাতে হলে এক ঘরে অবস্থানকারী সব সদস্যদের একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা পুরো পরিবারকে থাকতে হবে স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশ পরিহার করতে হবে।” 

মিরাজ খান

×