ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাবা-ছেলের প্রতারণা : ওসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন 

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ২৫ মে ২০২৫; আপডেট: ২৩:২৫, ২৫ মে ২০২৫

বাবা-ছেলের প্রতারণা : ওসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন 

ছবি: সংগৃহীত

জমি নিয়ে বাবা ও ছেলের প্রতারনার প্রতিবাদে এবং প্রতিকার চেয়ে আজ রবিবার (২৫) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতারনার শিকার ভূক্তভোগী ডেভেলপার পার্টনার ও বিনিয়োগকারীগণ। একই সাথে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ আনা হয়েছে। 

বরিশাল নগরীর দক্ষিণ চকবাজারে নির্মাণাধীন বিউটি সুপার মার্কেটের ডেভেলপার পার্টনার আবুল হাসান কুদ্দুস লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিউটি সিনেমা হলের পুরাতন ভবন সহ ৪০ শতক জমি তিনিসহ তারা তিনজন পার্টনার জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আট কোটি টাকা মূল্য নির্ধারন করে নগদ এক কোটি টাকায় বায়না রেজিষ্ট্রি করেছেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ষ্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে আরো এক কোটি সাত লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। বায়না রেজিষ্ট্রি চুক্তি অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে তাদের দলিল দেওয়ার কথা থাকলেও দলিল না দিয়ে তারা নানা তালবাহানা শুরু করেন। 

একপর্যায়ে জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে সৈয়দ কামরুন্নাহার আখি দাবি করেন ওই জমি তার দাদা কামাল উদ্দিন চৌধুরী তাকে মৌখিক হেবা দলিল দিয়েছেন। এ নিয়ে তাদের বায়না বাতিলের জন্য একটি মামলাও দায়ের করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে জমির মালিক জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরী তাদের কাছে জমি বিক্রি না করে ডেভলপার পাওয়ার নিয়ে বহুতল ভবন নির্মানের প্রস্তাব দেন। ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিগত ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল জমির রেজিষ্ট্রি পাওয়ার নিয়ে বহুতল ভবন নির্মানের চুক্তি হয়।

আবুল হাসান কুদ্দুস আরো বলেন, ওই জমি বিক্রির জন্য জুলিফিকার উদ্দিন চৌধুরী ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আক্তারুজ্জামানের সাথে গোপনে বায়না চুক্তি করেন। বায়না চুক্তি ও ডেভলপার পাওয়ার থাকা অবস্থায় তাদের সাথে প্রতারনা করে অন্যের সাথে বায়না চুক্তি করা হয়। 

পরে তাদের বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত চাইলে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার শালিশ বৈঠক হয়। পরবর্তীতে তাদের বিনিয়োগকৃত ২ কোটি ৭ লাখ টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলেন জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরী। কিন্তু পূর্বের ডেভেলপার অংশীদারদের বিনিয়োগকৃত ২ কোটি ৭ লাখ টাকা পরিশোধ না করে টাকার গ্যারান্টি হিসেবে ২ কোটি টাকার চেক প্রদান করেন।

একইসাথে প্রকল্পে ৩০% পার্টির করে আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে নতুনভাবে কাজী মফিজুল ইসলাম কামালের সাথে ২০১৮ সালে ডেভেলপমেন্ট করার জন্য রেজিষ্ট্রি চুক্তি করেন। 

এরইমধ্যে জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আশিক চৌধুরী হেবা দানপত্র দলিলের বলে জমির মালিকানা দাবি করে তৎকালীন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর যোগসাজশে তাদের নির্মানাধীন ভবন অবৈধভাবে ভেঙ্গে দেয়। 

সংবাদ সম্মেলনে কুদ্দুস দাবী করেন, চলতি মাসের গত ৯ মে সৈয়দ আশিক চৌধুরী বিএনপির নামধারী ৩০/৩৫ জন নেতাকর্মীদের নিয়ে জমি দখলের উদ্দেশ্যে তাদের ভবন উচ্ছেদ করতে যায়। এসময় নির্মিত ভবনের আংশিক ভেঙ্গে লুটপাট করা হয়। 

এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসিকে অবহিত করেও তেমন কোন প্রতিকার পাননি। ওইদিন সৈয়দ আশিক চৌধুরী বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমানকে ম্যানেজ করে ২/৩ দিনের জন্য কুয়াকাটায় ঘুরতে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল হাসান কুদ্দুস আরো বলেন, বিউটি হলের জায়গায় সৈয়দ আশিক চৌধুরী নতুন ভবন নির্মাণ করতে পারলে ওসির স্ত্রী নামে একটি ফ্ল্যাট লিখে দেয়ার কথা বলেছেন। যেকারণে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন। 

সৈয়দ আশিক চৌধুরীর পরিবারের প্রতারনার কারনে ডেভেলপার পার্টনার ও বিনিয়োগকারীরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে উল্লেখ করে কুদ্দুস আরও বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

বিষয়টি জানতে আশিক চৌধুরী ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

অপরদিকে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

আসিফ

×