ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লক্ষ্মীপুরে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের অনুষ্ঠানে অতিথি আ.লীগ নেতা

ফরহাদ হোসেন, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ২৩ মে ২০২৫; আপডেট: ১৫:৫৬, ২৩ মে ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের অনুষ্ঠানে অতিথি আ.লীগ নেতা

ছবি : জনকণ্ঠ

লক্ষ্মীপুরে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি আওয়ামী লীগের দুই নেতা। বিশেষ অতিথির চেয়ারে বসা আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। এ নিয়ে ফেসবুকে সাধারণ মানুষ ব্যাপক সমালোচনা করছেন। ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরাও।
জানা গেছে, সদর উপজেলার কাফিলাতলী বাজারে ‘শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ’র ক্লাবটি। উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ক্লাবটি পরিচালনা করেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে মাদক-সন্ত্রাস ও চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে একটি সভার আয়োজন করে ক্লাবটি। অনুষ্ঠানে অর্ধশতাধিক বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসমাইল হোসেন ও উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ও সদর উপজেলা পশ্চিম যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুল হাসান রতন।
ভিডিওতে দেখা যায়, দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন মাহবুবুল হাসান রতন। তার দুই পাশে বসে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া অন্যান্য বিএনপি-আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও বসে রয়েছেন তাদের সামনে।
বক্তব্যে রতন বলেন, মাদক-সন্ত্রাস ও চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে আমরা কঠোর হবো। যারা এসব কাজ করছেন, আগে তাদেরকে বুঝাবো এবং অভিভাবকদের বিষয়টি জানাবো। যদি তাতেও সমাধান না হয়, তাহলে পুলিশের হাতে তুলে দেবো। তখন কেউ আমাদের দোষারোপ করতে পারবে না। আমরা মাদক ও চুরি-ডাকাতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবো। বক্তব্যের শেষে সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানান বিএনপি নেতা রতন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময়ে একদিনও ভয়ভীতি ছাড়া রাস্তাঘাটে বের হতে পারিনি। কাফিলাতলী এলাকায় নেতৃত্ব দেওয়াতো দূরের কথা। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অথচ বিএনপির কিছু নেতাকর্মী তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।
তারা আরও বলেন, মাহবুবুল হাসান রতন ব্যক্তিগত স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের লোকদের অতিথি করেছিলো। সে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ ক্লাবকে কলঙ্কিত করেছে। আগামী ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভোট ভাগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজটি করেছেন। উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ করবো, রতনকে দল থেকে বহিষ্কার করার।
অভিযোগের বিষয়ে ক্লাবের দায়িত্বে থাকা মাহবুবুল হাসান রতন বলেন, আওয়ামী লীগের যারা ভালো লোক আছেন, তাদেরকে বিএনপিতে যোগদান করানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন। এছাড়া, তাদেরকে বিএনপিতে যোগ দিতে আনা হয়নি। দাওয়াত করেছি, মাদক-সন্ত্রাস ও চুরি-ডাকাতি বিরোধী সচেতনামূলক সভায়।
উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুষ্ঠানে অতিথি করার বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত রতনকে মৌখিক নোটিশ করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা পশ্চিম বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অতিথি করে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের ব্যানারে অনুষ্ঠান দুঃখজনক। এ ধরনের প্রোগ্রাম করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযুক্ত রতনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে ইউনিয়ন বিএনপিকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

সা/ই

×