ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাজারে দেশি খেজুরের কদর কম! 

সোহাগ খান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঢাকা  

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২৩ মে ২০২৫

বাজারে দেশি খেজুরের কদর কম! 

কেরানীগঞ্জের পথের পাশে, জমির আইলে, খাল-বিল পাড়ে এবং বাড়ির আনাচে-কানাচে থাকা খেজুরগাছে থোকায় থোকায় খেজুর ঝুলছে। অনেক খেজুরের গায়ে হলদে রং ধরেছে। আর ১০-১৫ দিনের মধ্যে সব খেজুর পেকে যাবে। তা দেখে চলতি পথের মানুষ এক মুহূর্তের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াচ্ছে। কোথাও কোথাও দেখা মিলছে শিশুদের খেজুর পাড়ার দৃশ্য । অনেকেই পাকা খেজুর বাজারে বিক্রি করছে। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব খেজুর । তবে মৌসুমি ফলের ভিড়ে দেশি খেজুরের কদর খুবই কম বাজারে ।

বলা হয়, বছরে দুই ফলন আসে খেজুর গাছে। শীতকালে মিষ্টি সুস্বাদু রস আর গরমকালে খেজুর ফল। খেজুর শুষ্ক ও মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ হওয়ায় গঙ্গার নিম্ন অববাহিকার খেজুরগাছে যথেষ্ট শাঁসযুক্ত উৎকৃষ্ট মানের খেজুর হয় না । তাই এটি খাদ্য হিসেবে খুব একটা ব্যবহার হয় না । তবে এই গাছের রস আকর্ষণীয় ও সুমিষ্ট। দেশি খেজুরকে কেউ কেউ বুনো বা জংলি খেজুর নামে ডাকেন । কেন না এটা কেউ চাষ করে না, জঙ্গলের গাছ।

দেশি খেজুরের ফলের শাঁস পাতলা, বিচি বড়, পাকা ফলের সংরক্ষণ ক্ষমতা খুবই কম। তবু পাকা ফলের সুমিষ্ট গন্ধ ও মিষ্টি স্বাদ অনেককেই আকৃষ্ট করে। পাকা খেজুর গ্রাম বাংলার শিশুদের কাছে খুব প্রিয়। 

স্কুলে যাওয়ার আগে সকালে সুমন, অহিদ, ঝুমুর, নারগিস, শিমা ও খালেদা জানায়, 'আমরা খেজুর পেড়ে ভাগ করে খাই। বেশি পেলে বিক্রিও করি ।'

উপজেলার বাস্তা ইউনিয়নের সোলাইমান সানী জানান, খুব সকালে বাচ্চারা পাকা খেজুরের খোঁজ করতে মাঠে ছুটে যায় । কে কোন গাছে উঠবে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। খেজুর পেলে তাদের চোখে মুখে যে আনন্দ ফুটে ওঠে, তা নিজেদের শৈশবকে মনে করিয়ে দেয়। এ সময় শাহানা বেগম বলেন, খেজুরগাছে কাঁটা থাকে। বাচ্চারা হুড়োহুড়ি করে এসব গাছে ওঠে । ভয়ে থাকি, কখন যেন দুর্ঘটনা ঘটে।'  উপজেলার হাসনাবাদ এলাকার সেন্টু মিয়া বলেন, শৈশবকে মনে করিয়ে দেয় পাকা খেজুর।

শুভাঢ্যা ইউনিয়নে খেজুরবাগ এলাকার গাছি আব্দুল মজিদ বলেন, এখন আর কেউ এ পেশায় থাকতে চায় না । খরচ বেশি কিন্তু আয় কম। ইকবাল গাছি বলেন, বয়স কেটে গেল খেজুরগাছের রস আর গুড় নিয়ে । অথচ তিন ছেলে মেয়েসহ পাঁচ জনের পরিবারের অভাব ঘোচাতে পারলাম না।

নোভা

×