
কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যুরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ পুরোদমে চলছে। নদী বেষ্টিত এই জেলার মাঠজুড়ে এখন শুধুই সোনালী ধানের সমারোহ। শ্রমিক-কৃষকের ব্যস্ততা, হাসি-আনন্দ আর কঠোর পরিশ্রমে সরব হয়ে উঠেছে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি প্রান্ত।
উপজেলা ভিত্তিক সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলায় কৃষকরা ধান কাটার পাশাপাশি মাড়াই কাজেও ব্যাপক ব্যস্ততা পালন করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধান ঘরে তোলার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটছে না বলেও জানিয়েছেন কৃষকরা।
চাষিরা জানিয়েছেন, এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় গড়ে ১৮-২০ মণ পর্যন্ত ধান পাওয়া যাচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত শ্রমিক না পাওয়ায় সময়মতো ধান মাড়াইয়ে কিছুটা দেরি হচ্ছে। অনেকেই ট্রাক্টর বা থ্রেসার মেশিনের সাহায্য নিচ্ছেন মাড়াই কাজ সহজ করতে।
নাগেশ্বরী উপজেলার কৃষক আবুল কালাম জানান, “আল্লাহর রহমতে ধান হয়েছে ভালো। কিন্তু শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না আগের মতো। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি দিলেও সবাই ব্যস্ত। তাই মেশিনে মাড়াই করতে হচ্ছে।”
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের পাশে আছি। ধান কাটার মৌসুমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি।” ফসল ঘরে তুলতে পারলেও বাজারে ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে কৃষকদের মধ্যে। স্থানীয় হাটবাজারে মোটা জাতের ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১,০০০ থেকে ১,১০০ টাকায়। অনেক কৃষক মনে করছেন এই দামেও লাভের পরিমাণ কম, কারণ সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি।
কুড়িগ্রামে ব্যুরো মৌসুমে ধান মাড়াই কার্যক্রমে একটি চাঞ্চল্যকর চিত্র উঠে এসেছে। ফসল ঘরে তুলতে পারায় কৃষকের মুখে হাসি ফিরলেও শ্রমিক সংকট ও বাজারদরের অসামঞ্জস্যতা তাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সঠিক পরিকল্পনা ও বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষকের এ অর্জনকে টেকসই করা এখন সময়ের দাবি।
নোভা