ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাগমারায় বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

আশরাফুল ইসলাম অন্তর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, বাগমারা, রাজশাহী

প্রকাশিত: ১৪:১৫, ২১ মে ২০২৫

বাগমারায় বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

দৈনিক জনকণ্ঠ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। চলতি মৌসুমে অতীতের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। মাঠ জুড়ে এখন পাকা ধানের সোনালি ঢেউ, আর সে ঢেউয়ের মাঝে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান ঘরে তোলার কাজে।

চাষের শুরুতে প্রচণ্ড খরায় কিছুটা বিপাকে পড়লেও পরবর্তীতে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ধানের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা।

উপজেলার মাড়িয়া, শিকদারী, বড়বিহানালী, খালিশপুর, বড়কয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বীজ সংকটে ধান চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার দ্বিগুণ জমিতে ধান আবাদ করেছেন কৃষকরা।

খালিশপুর গ্রামের কৃষক রহিম জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১০ কাঠা জমির স্থানীয় বি-২৮ জাতের ধান কেটেছেন। ফলন ভালো হলেও খরচের ভারে লাভ হচ্ছে না। শ্যামপুরের আব্দুর রহমান বলেন, “ধান ভালো হয়েছে, তবে শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ থাকবে কিনা বুঝতে পারছি না।”

মাড়িয়া গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, ১ বিঘা জমিতে ধান চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকা। অথচ বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১,০৫০-১,১০০ টাকায়। এতে করে বিঘা প্রতি ২-৩ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বড়কয়ার কৃষক মোতাহার হোসেন, খালিশপুরের শামছুর রহমান ও আব্দুল করিমও জানান, বেশি লাভের আশায় বেশি জমিতে ধান চাষ করলেও এখন ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবারে বাগমারা উপজেলায় ১৯ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গতবারের তুলনায় জমির পরিমাণ অনেক বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এখন একমাত্র শঙ্কা প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে। দুর্যোগ না এলে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

তবে কৃষকেরা বলছেন, ফসল ঘরে তুলেই কেবল শান্তি নেই। ঘামে ভেজা মাঠের ধানের উপযুক্ত মূল্য না পেলে ভবিষ্যতে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন তারা। সুধীমহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ,চাষে লাভজনক পরিবেশ না থাকলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হতে পারে।
 

হ্যাপী

×