
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরের কাঠেরপুল পাকা সড়কের হাটপাঙ্গাসী মোড় এলাকায় বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বাজারের প্রবেশপথ লায়লা মিজান স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ফজলের মোড় পর্যন্ত সড়কটি দিয়ে চলাচলরত হাজারো যানবাহন ও মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের এইচবিবি উঠে বেরিয়ে গেছে নিচের খোয়া-সুরকি ও কাদামাটি। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দের। বৃষ্টি নামলেই তাতে জমে থাকে পানি। আবার কোথাও দেখা মেলে প্যাঁচ প্যাঁচে কাঁদার। দেখে বোঝার উপায় থাকে না এটা পাকা সড়ক না জলাশয়। সড়কের কাদাপানির ভেতর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে হাজারো যানবাহন। আর সড়কের দুই পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে যারা চলাচল করছে, তাদের জামাকাপড় কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। রাস্তাটি পায়ে হেঁটে দেখা যায়, হাটপাঙ্গাসী বাজার এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে। বিশেষ করে বাজারের এক মাথা থেকে অন্য মাথা পর্যন্ত সড়কের ভয়াবহ অবস্থা। বাজার এলাকায় সড়কের বড় বড় গর্তের ভেতরে কাদাপানি জমে থাকায় সাধারণ মানুষ স্যান্ডেল খুলে হাতে নিয়ে বাজার করছেন। সড়কের কাদাপানি ঠেলে, বড় বড় গর্তের ভেতর দিয়ে সামনে এগোচ্ছে সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যান-রিকশাসহ ছোট-বড় অসংখ্য ট্রাক ও বাস।
স্থানীয়রা জানান, রায়গঞ্জ উপজেলার মানুষ এই পথ ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। সড়কটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্কুল শিক্ষক আলমগীর কবির জানান, ‘উপজেলাবাসীর কাছে হাটপাঙ্গাসী বাজারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাজারের ভেতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তাটির কারণে এখন মানুষকে ভোগান্তি স্বীকার হতে হচ্ছে।’
স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিম জানান, হাটের দিন শত শত কৃষক কৃষিপণ্য বিক্রি করতে এই বাজারে আসেন। কিন্তু বাজারের সড়কের যে অবস্থা তাতে তো পায়ে হেঁটেই চলা মুশকিল। তারপরও বাধ্য হয়ে কষ্ট করে মানুষ এই বাজারে আসেন। তাছাড়া যারা বাজার করতে আসেন, তারা পায়ে স্যান্ডেল রাখতে পারেন না। অনেক সময় গাড়ির চাকার কাদাপানি ছিটে এসে মানুষের জামাকাপড় নষ্ট হয়। কয়েক বছর ধরে এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ। সড়কটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এছাড়াও পাঙ্গাসি বাজারের অদূরে ইছামতি নদীর উপর স্থাপিত ব্রিজের পশ্চিম পাশে ভেঙ্গে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যাহা যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
সড়কের ভ্যান চালক আব্দুল হান্নান, আব্দুল মানিক ও গোলাই বলেন, পেটের তাগিদে এই সড়কে গাড়ি চালাই। সড়কের যে অবস্থা তাতে এই সড়কে গাড়ি চালানোর কায়দা নেই। মাঝে মাঝেই বাজারের ভেতরে বড় বড় গর্তে গাড়ির চাকা আটকে যায়। অনেক সময় গাড়ি উল্টেও পড়ে যায়। সড়কটি গত কয়েক বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মানুষের কাছে শুধু শুনি সড়কের কাজ শুরু হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সড়কের কাজ আর শুরু হলো না। সড়কটি সংস্কার করা হলে মানুষের ভোগান্তি কমবে। তাই সরকারের কাছে সড়কটি সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানাই।
রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার সংস্কারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সড়কের সংস্কার কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।’
সিরাজগঞ্জ (সওজ) সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইমরান সোহেন সুমেল বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’
মিরাজ খান