ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজনৈতিক পরিচয়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি, প্রশাসন নিশ্চুপ! 

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিবালয় মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ১৮ মে ২০২৫

রাজনৈতিক পরিচয়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি, প্রশাসন নিশ্চুপ! 

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা ও ইছামতি নদী সংযুক্ত কান্তাবতী নদীর মাঝে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। রাজনৈতিক পরিচয়ে স্থানীয় একটি চক্র অবৈধভাবে নদীর মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা টাকা। প্রায় মাস যাবৎ চলে আসা এমন কর্মযজ্ঞের প্রতিবাদ করায় চিহ্নিত এ চক্রের হাতে ইতোমধ্যে নাজেহাল হয়েছেন অনেকে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও পায়নি কোন প্রতিকার এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। 

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, শিবালয় উপজেলার উথলী-জাফরগঞ্জ সড়কের পাশে বাসাইল, কলাবাগান এলাকায় কান্তাবতী নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে পানি প্রবাহ। এতে নদী পারের হাজারো মানুষ ভুগছেন পানির সমস্যায়। আর রাতের আধারে নদীর বুক থেকে ভ্যাকু দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। যা ভারী ট্রাকযোগে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এ যেন দেখার কেউ নেই।

এদিকে, নদীর মাঝে বাঁধ ও মাটি কাটার বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন  প্রতিবাদ করায় তাদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করছে বিএনপি নামধারী কতিপয়রা। যে কারণে এলাকার কেউ তাদের ভয়ে মুখ খুলছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার বাশাইল গ্রামের জনৈক ব্যক্তি জানান, ‘বর্তমান সময়ে বিএনপি’র ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটির পদ-পদবিতে থাকা কয়েক নেতা নদীর মাটি কেটে মোটা টাকায় অন্যত্র বিক্রি করছে।’ যার মধ্যে উথলী ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ আব্দুর রাজ্জাকের নাম উঠে এসেছে।

কলাবাগান ও বাশাইল এলাকার স্থানীয় কয়েকজন কৃষক ডা. কালিপদ মন্ডল, ফরিদ শেখ, রাজ্জাক মুন্সী ও করিম শেখ বলেন, নদীতে বাঁধ দেয়ায় যমুনার পানি ইছামতি হয়ে কান্তাবতীতে প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে নদী পাড়ের মানুষ পানির সমস্যায় ভুগছে। রাতের আধারে চলা মাটির ট্রাকের ধুলোবালু ও পানি সংকটে ফসলের ক্ষেত-খামারেও দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।

উথলী ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: ফজলুল হক মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা নদীর মাঝের মাটি কাট ছিনা। নদী পাড়ের জমি কিনে সেখানের মাটি কেটে বিক্রি করছি। ট্রাক পারাপারের জন্য নদীতে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এ ব্যবসার সাথে স্থানীয় ও রাজনৈতিক দলের অনেকেই সম্পৃক্ত রয়েছেন।

তবে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, ‘দলের পদ-পদবি ব্যবহার ও নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অপকর্মের কোন সুযোগ নেই। দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে। এমন অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।’

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, ‘নদীতে বাঁধের বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। আমার এসিল্যান্ড নায়েব সাহেবকে সরজমিন রিপোর্ট করতে বলেছি। এখনো কোন রিপোর্ট আমার কাছে পৌঁছেনি। তবে, দ্রুত এ কর্মযজ্ঞের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও বাঁধ অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে।’

মিরাজ খান

আরো পড়ুন  

×