ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মানবাধিকার ও যুবসমাজের ভূমিকা নিয়ে রংপুরে এইচআরএসএস’র সেমিনার

বেরোবি সংবাদদাতা।

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ১৬ মে ২০২৫

মানবাধিকার ও যুবসমাজের ভূমিকা নিয়ে রংপুরে এইচআরএসএস’র সেমিনার

রংপুর বিভাগের আট জেলার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে যুক্ত থাকা ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কিছু  শিক্ষার্থীদের নিয়ে শহরের দর্শনায় অবস্থিত ব্রাক লার্নিং  সেন্টারে শুক্রবার (১৬ মে) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো “মৌলিক মানবাধিকার ও যুবসমাজের ভূমিকা” শীর্ষক একটি সেমিনার।

এটি আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সার্পোট সোসাইটি (এইচআরএসএস) ও ইউএন রেসিডেন্ড কো ওর্ডিনেটর'স অফিস (ইউএনআরসিও)। যারা দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং নিয়ে কাজ করে আসতেছে।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন হিউম্যান রাইটস সার্পোট সোসাইটি নির্বাহী পরিচালক মো. ইজাজুল, এইচআরএস'র রিসার্চ অফিসার আবু  সাদাত মো সায়েম, দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা কালফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ক্যান্ডিটেড মো আব্দুর রাকিব সহ এইচআরএস'র টিম এবং সেমিনারে অংশ নেওয়া ৩০জন শিক্ষার্থী। 

সেমিনারে অংশ নেয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা। সেশনে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে লজিস্টিক হিসেবে, ব্যাগ, নোট, কলম বিতরণ করা হয়।  


এ সময় এইচআরএসএস'র রিসার্চ অফিসার আবু সাদাত মো: সায়েম বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি সমতা, বৈষম্যহীনতা, শিক্ষা, রাজনৈতিক, তথ্য পাওয়া, ভোটের অধিকার স্বাধীন ভাবে ধর্ম পালনের অধিকার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেন।

কালফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ক্যান্ডিটেড মো আব্দুর রাকিব সেমিনারে আসেন।তিনি তার আলোচনায় ব্যক্ত করেন মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত এবং সত্য-অনুসন্ধানে ও মানবাধিকার ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং-এর উপর এবং এর প্রভাব নিয়ে। এ সময় তিনি বলেন, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করার কারণ সত্য উদঘাটন করা। অপরাধী শনাক্তকরণে সহযোগিতা এবং সংবেদনশীলতা তৈরি করা। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এর সময় অবশ্যই ভিক্টিম এর উপর সহমর্মিতা দেখাতে হবে।

ভিক্টিম যদি নাম প্রকাশ করতে না চায় তাহলে গোপন রাখা। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এর সময় অবশ্যই পাশাপাশি এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের বক্তব্য নেওয়া এবং সাংবাদিকদের সহায়তা নেওয়া।কোনো ভাবেই যেনো কেউ ভিক্টিম কে টার্গেট করতে না পারে। তথ্য উদঘাটন এর সময় ভিক্টিম কে দোষ দেওয়া না হয়।


এ সময় তিনি আরও বলেন বাংলাদেশে একেকটা বাহিনীর একক রকম টর্চার ছিল। যেখানে তারা অপরাধীদের এমন সব নির্যাতন করছে যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান। পূর্বে মানুষ নির্যাতন কে বিনোদন হিসেবে নিত তা বর্তমানে মানুষ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলছে। ইউরোপের মানবাধিকার লঙ্ঘন হ্রাস পেতে শুরু করে ভলতেয়ার, লিন হান্ট প্রমূখ ব্যক্তিদের লেখালেখির মাধ্যমে।


হিউম্যান রাইটস সার্পোট সোসাইটি নির্বাহী পরিচালক মো. ইজাজুল মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার কি, মানবাধিকার রক্ষাকারীদের ভূমিকা ও বাধ্যবাধকতা এবং কিভাবে নেটওয়ার্ক গঠন করতে হবে, কিভাবে মানবাধিকার রক্ষা হবে, মাঠে তাদের ভূমিকা কি হবে,
মানবাধিকার সহিংসতার ডকুমেন্টেশন এবং নিউজ ক্লিপিং,
এইচআরভি ডকুমেন্টেশনের মৌলিক নীতি, ডকুমেন্টেশন এবং রিপোর্টিং, মানবাধিকার ভায়োলেন্স এর সমস্যা এবং ডেটা বিশ্লেষণ এসব নিয়ে আলোচনা করেন।

সেখানে তিনি বলেন, মানবাধিকার  কেবল একটি আইনি বিষয় নয়, এটি একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের তরুণ প্রজন্মকেই সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে হবে।দেশের যুবসমাজ যদি মানবাধিকারের সঠিক জ্ঞান রাখে এবং সচেতন থাকে, তবে সমাজে সহিংসতা, বৈষম্য ও নির্যাতনের মতো অন্যায় রোধ করা সম্ভব হবে।

রিফাত

×