
ছবি : সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস ও রাজধানীর কাকরাইল এলাকা। ১৪ মে’র ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জবি শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইল এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদদীন বলেন, “আমরা ১৪ মে’র ঘটনাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘কালো দিবস’ ঘোষণা করছি। এদিন রাষ্ট্রীয় বাহিনী যেভাবে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি জানান, আজ শুক্রবার (১৬ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সমাবেশ এবং জুমার নামাজের পর গণঅনশনে বসবেন আন্দোলনকারীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশ এবং অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে তারা দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে এবং এই অচলাবস্থা কতদিন চলতে থাকে, সেদিকে সবার দৃষ্টি। এদিকে আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ ও চাপা উত্তেজনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, সহিংস হামলার বিচার এবং জবির কাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
গত বুধবার তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা যমুনার উদ্দেশে লং মার্চ শুরু করলে কাকরাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর থেকেই কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে কাকরাইল এলাকায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বসে আছেন, কেউ কেউ শুয়ে রয়েছেন। ‘আপস নয়, সংগ্রাম’, ‘দালালি নয়, রাজপথ’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ। বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অধ্যাপক রইছ উদদীন ঘোষণা দেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এটি এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে আসিনি, বরং ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। কেউ যদি আমাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য সহনীয় হবে না।”
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আজকের গণঅনশন ও আলোচনার ভিত্তিতে আগামী দিনের কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অচলাবস্থা ও শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে সংশ্লিষ্টরা।
সা/ই