
বেদখল আর ভরাট সমানতালে চলছে পিলটকাটা খাল
সাগরবুকে জেগে ওঠা দ্বীপ কুতুবদিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ পিলটকাটা খাল। এককালে বিভিন্ন নৌকা-সাম্পান চলাচলসহ নিরাপদ পোতাশ্রয় ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অভয়ারণ্য ছিল এই খাল। অত্যন্ত গভীর ও দীর্ঘতম এই খালের সেই জৌলুস আর নেই। ষাটের দশকে বিসিক পয়েন্টে ‘ক্রস বাঁধ দিয়ে স্লুইস গেট’ বসানোর পর থেকে ভরাট শুরু হয় দ্বীপের এই প্রধান খাল।
পলি জমে খালের দু’পাশে জেগে ওঠা চর বিনাবাঁধায় দখল করে লবণের মাঠ করা হচ্ছে। এভাবে দখল-দূষণ ও খননের উদ্যোগ না থাকায় বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে পিলটকাটা খাল প্রকাশ বড় খাল। উপজেলার ঠিক মাঝখানে আঁকাবাঁকা উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং, লেমশিখালী, কৈয়ারবিল ও বড়ঘোপের আংশিক এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি সোজা কুতুবদিয়া চ্যানেলের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এর সঙ্গে সংযোগ রয়েছে অভ্যন্তরীণ আরও কয়েকটি ছোট খাল।
শুষ্ক মৌসুমে হাজার হাজার একর জমিতে লবণ মাঠ করা হয় এবং বর্ষায় দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকার পানি চলাচল করে এই খাল হয়ে। অভিজ্ঞ মহলের তথ্যমতে খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার ও প্রস্থ ছিল ২০/২৫ মিটার। বিগত কয়েক বছরে দু’পাশে অব্যাহত দখল-দূষণে বর্তমানে মাঝখানে নামমাত্র একটি ঝিরি প্রবহমান। আবার বর্ষায় ক্রসডেম স্লুইস গেটে পানি আটক করে মাছ ধরা ও ঝিরির বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় অর্ধশ’ বাঁধ দিয়ে মাছ ধরে কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী মহল।
ফলে পানি চলাচলে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল, বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট প্লাবিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে থাকে। লবণ চাষিরা জানায়, ভরাট খালে পানি না থাকায় লবণ উৎপাদন মৌসুমে চরম পানি সংকট দেখা দেয়। কাজেই দ্রুত খালটি খনন করার দাবি দ্বীপবাসীর।