
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানের নামে রাজারহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন এক ব্যক্তি। গতকাল বৃহস্পতিবার (০১ মে) রাত সাড়ে ১০টায় মো. রুবেল মিয়া (২৬) নামের এক ব্যক্তি সাধারণ ডায়েরির আবেদন করেন।পরে ওই ব্যক্তির আবেদনটি সাধারণ ডায়েরি আকারে নথিভুক্ত করা হয়। রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তসলিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রুবেল মিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চান্দামারী গ্রামের আবদুল মজিদ ওরফে বাচ্চুর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুল মাল সম্পাদক।প্রাণনাশের আশঙ্কায় করা সাধারণ ডায়েরিতে রুবেল মিয়া উল্লেখ করেন, গত ২১ এপ্রিল রাজারহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চতলার কুঁড়া ও নাখেন্দা বিল মাছ চাষের জন্য উন্মুক্ত ডাকের অনুষ্ঠানে বিএনপির ওই আহ্বায়ক (আনিছুর রহমান) ডাকে অংশ নিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইজারা হাতিয়ে নেন। এই নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন।
এরপর গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার চান্দামারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে অভিভাবক সমাবেশে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি গঠনে অনিয়ম নিয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে তিনি প্রতিবাদ জানান। পরে ওইদিন বিকেলে বিএনপির উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান, বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, চাকিরপশা ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুয়েল রানাসহ দলীয় লোকজন তাঁকে থানা মোড়ে মুকুল ফার্মেসিতে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এসময় তারা বলেন, “তোর কলিজা ছিঁড়ে নেব, চেন আমাক্য? জামায়াতকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেব। চেনো বিএনপিকে?”
ওই ঘটনার একটি ৫২ সেকেন্ডের ভিডিও গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (০১ মে) কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে আনিছুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়। নোটিশে পত্রপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে ওই বিএনপি নেতাকে শোকজ নোটিশের পর নিরাপত্তার আশঙ্কায় জামায়াতের নেতা রুবেল মিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।রুবেল মিয়া বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলে থানামোড়ে আমায় ডেকে নিয়ে আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন, লাঞ্ছিত ও গালিগালাজ করেন। তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। নিরাপত্তার আশঙ্কায় আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।”
এ বিষয়ে জানতে রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তসলিম উদ্দিন জানান, “থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। এখন ভুক্তভোগী ব্যক্তি (রুবেল মিয়া) চাইলে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি নিয়ে সেই অনুযায়ী তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন দাখিল করবো।”
আফরোজা