পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার বিরুদ্ধে এবার মসজিদ ও বিধবা নারীর জমি দখল করে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ সালে বাকেরগঞ্জ পৌরসভা ও বি এম ডি এফ এর অর্থায়নে চৌমাথা নামক স্থানে একটি দোতালা পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করা হয়। ওই মার্কেট নির্মাণে জমি সংকট দেখা দিলে তখন পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত শাহ আলম হাওলাদারের স্ত্রী লুৎফুন্নেছা বেগমের ক্রায় করা সম্পত্তি ভরপাশা ৪৬ নং মৌজার এস এ ১০৭৫, দাগ নম্বর, ১১১১ থেকে মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া মার্কেটের নামে ৬ শতাংশ জমি বিধবা নারী লুৎফুন্নেছা বেগমের থেকে রেজিস্ট্রি দলিল করে নেয়। ওই ৬ শতাংশ জমির পরিবর্তে মার্কেটের নিচ তলা থেকে তিনটি স্টল দেওয়ার নামে জমি নিলেও গত ৯ বছরে তাকে কোনো স্টল দেওয়া হয়নি।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, চৌমাথা জামে মসজিদের নামে ভরপাশা ৪৬নং মৌজার এস এ ২৪২২ থেকে ১১১৩ দাগে ১০ শতাংশ জমি রয়েছে। ছয় শতাংশ জমির উপর মসজিদের মূল ভবনটি। বাকি চার শতাংশ জমি পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে। ওই জমি নেয়ার সময় মসজিদের নামে দুইটি স্টল দেওয়ার কথা থাকলেও ৯ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত কিছুই পায়নি মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, ওই মার্কেট নির্মাণের আট বছর পরে ২০২৩ সালে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মার্কেটের বারান্দা ও সিঁড়ির নিচে পৌরসভার নামে একাধিক স্টল নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন। যাহার কোন সঠিক হিসাব নেই পৌরসভার ফান্ডে। এছাড়াও ওই মার্কেটটিতে অর্ধশত স্টল রয়েছে সেই স্টল গুলো ভাড়া দিয়ে তাদের থেকে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী লুৎফুন্নেছা বেগমের বলেন, ‘পৌরসভার মেয়র আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় সাব রেজিস্ট্রার অফিসে তখন মার্কেটে নিচ তলায় তিনটি স্টল দেয়ার কথা হয় তাই দলিলে স্বাক্ষর দেই। এখন পর্যন্ত মার্কেটের নিচতলা আমাদের কোন স্টল দেওয়া হয়নি। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখ পৌরসভার বিবিধ আদায় রশিদ যার পে অর্ডার নং ০৯৮০০৫১ সেই পে অর্ডারে লেখা থাকে আমি তাদের ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি যাহার বিনিময়ে দ্বিতীয় তলায় ৪২ নম্বর স্টল আমাকে দেয়া হয়েছে। অথচ সেই স্টল এখনো পৌর কর্তৃপক্ষের আন্ডারে রয়েছে। এবং সেই স্টল পৌর কর্তৃপক্ষ ভেঙে রেখেছে। অথচ ওই স্টলের ভ্যাট বাবদ আমার থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।’
চৌমাথা জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ বশির মৃধা জানান, মসজিদের জমিতে যদি আমরা স্টল নির্মাণ করে ভাড়া দিতাম ওই অর্থটা মসজিদের ফান্ডে জমা হতো। অথচ পৌর মেয়র স্টল দেয়ার নামে মসজিদের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে। গত ৯ বছরে তার কাছে আমরা বারবার গেলেও মসজিদের স্টল তিনি এখন পর্যন্ত দেয়নি।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়াকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এম হাসান