ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মাপাড়ে চার এভিনিউ নির্মাণ 

ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ

আবুল বাশার, শরীয়তপুর

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ

নড়িয়া উপজেলার সুরেশ^র এলাকায় পদ্মাপাড়ে জয় বাংলা এভিনিউ

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় পদ্মাপাড়ে জয় বাংলা এভিনিউ, সোনার বাংলা এভিনিউ, রূপসী বাংলা এভিনিউ ও স্বাধীন বাংলা এভিনিউ নির্মাণে বন্যা ও প্রমত্ত পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে সুরক্ষা পাচ্ছে জেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের (প্রথম সংশোধিত) আওতায় নড়িয়াতে পদ্মাপাড়ে এক হাজার ৪শ’ ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জাজিরা উপজেলার সফি কাজীর মোড় থেকে নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর মোড় পর্যন্ত ১০.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ জয় বাংলা অ্যাভিনিউ নামে বেড়িবাঁধ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ, সখিপুরে ৫শ’ ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলার তারাবুনিয়া স্টেশন বাজার হতে ধুলারচর মনাই হাওলাদার বাজার পর্যন্ত পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার দীর্ঘ সোনার বাংলা এভিনিউ নামে বেড়িবাঁধ, জাজিরাতে ৮শ’ ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট হতে সফি কাজীর মোড় পর্যন্ত আট দশমিক ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসী বাংলা এভিনিউ নামে বেড়িবাঁধ এবং নড়িয়ার চরআত্রা-নওপাড়ায় ৫শ’ ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ স্বাধীন বাংলা নামে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।

এসব বেড়িবাঁধের কোনো কোনোটির কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে আবার কোনোটার কাজ ৯৬ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এসব বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় পদ্মা নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও সম্পদ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে। এতে পদ্মা নদী পাড় সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত নড়িয়া উপজেলার মুলফৎগঞ্জ, কেদারপুর, চন্ডিপুর, সুরেশ^র, নওপাড়া, চরআত্রা, মোক্তারের চর, জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বিলাশপুর, নাওডোবা, কলমীরচর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা, ধুলারচরসহ পদ্মা নদীর আশেপাশের ৫ লক্ষাধিক মানুষ বন্যা ও নদী ভাঙন থেকে সুরক্ষা পাচ্ছে।

জানা গেছে, শুধু ২০১৮ সালে নড়িয়াতে সাড়ে পাঁচ হাজার ঘরবাড়িসহ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, ফসলি জমি ও বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। নড়িয়াতে প্রমত্ত পদ্মার ভাঙা-গড়ার আতঙ্কের এলাকায় এখন ভাঙনরোধ হয়ে সেখানে গড়ে উঠছে সুরম্য অট্টালিকা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা প্রতিষ্ঠান। গত ৫০ বছর যাবৎ যেখানে পদ্মার ভাঙাগড়ার সঙ্গে মানুষ লড়াই করে কোনো রকম টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল, সেখানে আজ ভাঙনরোধ হওয়ায় মানুষ নিরাপদে বসবাস করছে। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য পরিণত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। এ ছাড়া জেলা সদরের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তিনাশা নদীর ডান ও বাম তীর রক্ষার জন্য নড়িয়া থেকে মাদারীপুর জেলার কালকিনি পর্যন্ত প্রায় ২০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

এতে হাজার হাজার লোক নদী ভাঙন ও বন্যার হাত থেকে সুরক্ষা পাবে। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, পাঁচ বছর আগেও নড়িয়ায় নদীভাঙন ছিল। হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে এখন আর নড়িয়ায় নদী ভাঙন নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন এবং তিনি দূরদর্শী পদক্ষেপ নেন। সেজন্য তিনি ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দিয়েছেন। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতার কোনো সমস্যাই থাকবে না। 
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, আমরা বর্তমান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রীর সঠিক দিক-নির্দেশনায় নিরলস নানা উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি।

×