ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুর-৩

আওয়ামী লীগে নাহিম রাজ্জাক এগিয়ে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কারাগার

আবুল বাশার, শরীয়তপুর

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ৫ জুন ২০২৩

আওয়ামী লীগে নাহিম রাজ্জাক এগিয়ে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কারাগার

জেলার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত শরীয়তপুর-৩

জেলার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত শরীয়তপুর-৩ আসনটি ভেদরগঞ্জ উপজেলার একাংশ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন শরীয়তপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার রাজনৈতিক দলীয় নেতা-কর্মীরা। জাতীয় নেতা প্রয়াত আবদুর রাজ্জাকের স্মৃতিবিজড়িত এ আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
এ আসনে রয়েছে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা, ডামুড্যা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং গোসাইরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি প্রস্তাবিত পৌরসভা। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে এটিই ছিল জেলার সর্ববৃহৎ নির্বাচনী এলাকা। ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলখ্যাত ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সখিপুর থানাকে শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে কেটে নিয়ে ২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের পাঁচ মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। তাঁরা হলেন-
বর্তমানসহ টানা তিনবারের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পারভীন হক সিকদার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির মহিলা বিষয়ক সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত এমএ রেজার সহধর্মিণী সৈয়দা শাহজাদী ফরিদা রেজা নূর এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে।

বিএনপি থেকেও মনোনয়ন প্রত্যাশী দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন-একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থী তারেক জিয়ার একান্ত সচিব খ্যাত মিয়া নূর উদ্দিন অপু এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম। বিএনপির বিগত নির্বাচনের প্রার্থী কয়েকটি মামলায় দীর্ঘদিন যাবৎ রয়েছেন কারাগারে। মনোনয়ন প্রত্যাশী দু-একজন এলাকায় যোগাযোগ রাখলেও সাংগঠনিকভাবে বিএনপি মূলত অবলম্বন করছে কচ্ছপ গতি। 
এ আসনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে প্রয়াত জননেতা আবদুর রাজ্জাকের সুযোগ্য পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের বিকল্প নেই বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।  নাহিম রাজ্জাক এমপির অনুসারীদের দাবি, প্রায় তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে নাহিম রাজ্জাক তার নির্বাচনী সব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদেও তিনি পাশে থাকেন সব সময়। 
শরীয়তপুর-৩ নির্বাচনী এলাকা ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিগণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণ ও পৌর মেয়রসহ তৃণমূল নেতাকর্মীরা নাহিম রাজ্জাকের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার বিজয়ের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন জোরেশোরে। এলাকার উন্নয়নের দিকে চিন্তা করলে এ আসনে আধুনিক শরীয়তপুরের রূপকার, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রয়াত কালজয়ী নেতা আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের কোনো বিকল্প নেই। 
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে বেশিরভাগ সময় আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল এ আসনটি। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবিদুর রেজা খান, ’৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের ইব্রাহীম খলিল ওরফে নওয়াব বালা, ’৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার ফারুখ আলম, ’৮৮ সালে ৪র্থ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এমএ রেজা, ’৯১ সালে ৫ম সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন বাকশাল সম্পাদক (আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে) আব্দুর রাজ্জাক, ’৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে (এক তরফা) বিএনপি প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণ, ’৯৬ সালের ১২ জুন ৭ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, ২০০১ সালে ৮ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের লীগের আব্দুর রাজ্জাক, ২০০৮ সালে ৯ম নির্বাচনে আবারও আব্দুর রাজ্জাক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 
২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর  আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ২০১২ সালের মার্চে শূন্য আসনে উপনির্বাচনে প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাকের জ্যেষ্ঠ পূত্র নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাহিম রাজ্জাক আওয়ামী লীগের টিকিটে দ্বিতীয় বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদেও দলীয় টিকিটে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন নাহিম রাজ্জাক। 
’৭৫ ট্র্যাজেডির ২১ বছর পর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করলে এই আসনের সংসদ সদস্য জননেতা আব্দুর রাজ্জাককে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়। ক্ষমতার ৫ বছরে আব্দুর রাজ্জাক তার নির্বাচনী এলাকাসহ গোটা জেলায় অভাবনীয় উন্নয় করেন। যা স্বাধীনতার পরে ২১ বছরেও কোনো দল বা সরকার করেননি। আব্দুর রাজ্জাকের উন্নয়নের ছোঁয়ায় এ আসনে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক অবস্থান অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সুসংগঠিত ও মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 
আধুনিক শরীয়তপুরের উন্নয়নের রূপকার হিসেবে পরিচিত আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর তার সুযোগ্য পুত্র নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর থেকে নাহিম রাজ্জাক তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে শরীয়তপুরের-৩ আসনে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজে ভবন নির্মাণ, প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, নানা উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীসহ আমজনতার কাছে আস্থাভাজন প্রিয় নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছেন। 
নাহিম রাজ্জাক তার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের জন্য ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলার চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নানা উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে চরাঞ্চলে যেন শহরের ছোঁয়া লাগিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শরীয়তপুরের এ আসনটিতে বিগত জোট সরকারের আমলে তেমন কোনো উন্নয়নমূলক কাজ না হলেও আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকেই নাহিম রাজ্জাকের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের মানুষ। এলাকাবাসী জানান, নাহিম রাজ্জাকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল আজ ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নানা উন্নয়ন। সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের কঠোর প্রচেষ্টায় এ অঞ্চলের  শতভাগ মানুষ আজ বিদ্যুত সংযোগের আওতায় এসেছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনোনয়েনের বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবলু শিকদার, ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ গোলন্দাজ বলেন, প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাকের হাত ধরে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত হয়েছে। তার মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে এলাকায় বিপুল পরিমাণের উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। রাজ্জাক সাহেবের মৃত্যুর পরে গত এক যুগে তার সুযোগ্য সন্তান নাহিম রাজ্জাক একাধারে সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি এবং এলাকার উন্নয়ন করেছেন প্রশংসনীয় হারে। তারা বলেন, শরীয়তপুর-৩ আসনে জননেত্রী শেখ হাসিনার দল একমাত্র নাহিম রাজ্জাকের হাতেই নিরাপদ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আব্দুর রাজ্জাক গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে নাহিম রাজ্জাক বিদেশের চাকরি ছেড়ে তার পিতার রাজনৈতিক ছায়াসঙ্গী হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার পাশাপাশি ঢাকায় ব্যবসা শুরু করেন। ২০০৫ সালে নাহিম রাজ্জাককে ডামুড্যা পৌরসভা ও ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়। ২০১০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যও করা হয় নাহিমকে। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নাহিমও এলাকায় বেশ উন্নয়নমূলক কর্মকা- পরিচালনা করেছেন। নাহিম সংসদ সদস্য হওয়ার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরপির সহযোগি সংগঠন ইয়ং বাংলার আহ্বায়ক। কমনওয়েলথ দেশভুক্ত আন্তঃপার্লামেন্টিরিয়ান জলবায়ু বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক এবং জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক। এলাকায় সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় সব কর্মকা-ে নাহিম রাজ্জাকের উপস্থিতি এবং ভূমিকা প্রশংসনীয়। 
সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশে^র কাছে বাংলাদেশকে একটি উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে সারা বাংলায় যে অভাবনীয় উন্নয়ন হচ্ছে তারই ধারাবাহিকতায় নেত্রীর নির্দেশে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি। 
আওয়ামী লীগ থেকে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সৈয়দ আব্দলু আউয়াল শামীম ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের সন্তান। তিনি স্কুল জীবনে আশির দশকের গোড়ার দিকে ঢাকা মহানগর সাবেক ৫৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে মিছিল-সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেন। এরপর ১৯৮৪ সাল থেকে ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে চলে আসেন।

তিনি স্নাতকের ছাত্রাবস্থায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগ মনোনীত ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে শামীম তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে তাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এবং ২২তম কাউন্সিলে উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি এ আসনে আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানিয়েছেন। 
শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় ব্যাপক গণসংযোগ ও অসহায় দরিদ্র মানুষের সাহায্য সহযোগিতা করে এলাকায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বিশিষ্ট শিল্পপতি পারভীন হক সিকদার। তিনি কার্ত্তিকপুরের সন্তান এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের কন্যা। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছেন। 
এখানে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অন্যতম রয়েছেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের বারবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক অনল কুমার দে। তিনি বিগত ৪৫ বছর ধরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন সময়ে দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিশেষ করে সেনা সমর্থিত ১/১১-এর সময়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে কারারুদ্ধ করা হলে রাজধানী ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এক বক্তৃতায় তিনি নির্ভয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে ছাড়া আমরা সংলাপ বা নির্বাচনে যাব না। এ সময় তিনি দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করার দাবিও জানান। 
পরবর্তীতে এ ঘটনার জের ধরে সেনা সমর্থিত সরকারের বাহিনী কর্তৃক অনল কুমার দে দৈহিক নির্যাতনের শিকারও হন। তৃণমূল নেতাকর্মীসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ মনে করেন, নির্লোভ ও ত্যাগী বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শের রাজনীতিবিদকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এলাকার উন্নয়নসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য ফিরে আসবে এবং নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হবে। 
এ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির মহিলা বিষয়ক সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত এমএ রেজার সহধর্মিণী সৈয়দা শাহজাদী ফরিদা রেজা নূর। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে সর্বস্তরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং জনগণ আমাকে চায়। আমি তাদের বলে দিয়েছি আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে টিকিট দেয় তা হলে আপনাদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ। যখন নেত্রী প্রয়োজন মনে করবে তখনই তার নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাব। আমার নেত্রী যদি মনে করে যে, আমি যোগ্যতা অর্জন করেছি তাহলে আমাকে ডেকে নিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হলে তাতে তৃপ্তি এবং আনন্দ থাকবে এবং কাজ করার স্পৃহা বেড়ে যাবে।
অন্যদিকে, এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের একান্ত সচিব (পিএস) খ্যাত সাবেক ছাত্রদল নেতা মিয়া নূর উদ্দিন অপু গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুরের সন্তান। নূর উদ্দিন অপু বয়সে তরুণ হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এবং জিয়া পরিবারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য লোক। 
গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি তারিক আজিজ মোবারক বলেন, হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলায় মিয়া নূর উদ্দিন অপু কারাগারে রয়েছেন। গত নির্বাচনের কয়েক দিন আগে নির্বাচনী গণসংযোগের সময় তাকে হামলা করে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হলে আজো তিনি কারাগারে রয়েছেন। তিনি এই সংগঠন এবং জিয়া পরিবারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন বার বার। তার থেকে নির্ভরযোগ্য, জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত লোক এ আসনে বিএনপি থেকে কেউ নেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আসন্ন নির্বাচনে নূর উদ্দিন অপুকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হবে ইনশাআল্লাহ। 
বিএনপির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সাঈদ আহমেদ আসলাম ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের সন্তান। তিনি শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার ঘনিষ্ঠজনেরা মনে করেন, সাঈদ আহমেদ আসলামকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে। 

×