উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও ইউনিয়নের বিশাল একটি পাহাড় রাতের আঁধারে এভাবে কেটে ফেলা হয়েছে
জেলার পটিয়ায় পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ একটি চক্র উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের সরকারি পাহাড়ের ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যে কেটে শেষ করা হয়েছে। প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত পাহাড়ের এ মাটি লুট চললেও স্থানীয় প্রশাসন চুপ রয়েছে। হাইদগাঁও ইউনিয়নে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সম্মুখের এ পাহাড়টি কেটে ফেলা হচ্ছে। পাহাড় কাটার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে একাধিক এস্ককেভেটর। এস্ককেভেটর দিয়ে প্রতিদিন রাতেই পাহাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে। পাহাড়ের মাটি দিয়ে আশপাশের এলাকা ভরাট করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাসীল দলের নেতাদের সহযোগিতায় কিছুদিন ধরে উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নে এ পাহাড় কাটা চলছে। এতে করে হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। এদিকে, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার পাহাড় কাটা বন্ধে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ২১ মে স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেন। এতে পটিয়ার পাহাড় কাটা থেকে বিরত রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের খামারের পাশে রয়েছে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। এটির পাশে বিশাল আকারের একটি পাহাড় রয়েছে। এটি সংঘবদ্ধ চক্র কিছুদিন ধরে রাতের আঁধারে কেটে এর মাটি বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে। প্রতিদিন ৮/১০টি পিকআপ দিয়ে পাহাড়ের মাটি লুট করছে। পাহাড় কাটার ফলে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে পাহাড় ও বনাঞ্চলের আয়তন। পটিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শাহজাহান জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি অবগত হয়েছেন।
খুব শীঘ্রই সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আর যাতে নতুন করে পাহাড় কাটতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে মাটি লুট করার খবর পেয়ে ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। যে স্পটে পাহাড় কাটছে তা শনাক্ত করতে না পারার কারণে মাটি পাচারকারীদের আটক সম্ভব হয়নি।
হবিগঞ্জে বালু তোলায় বিপন্ন পরিবেশ
নিজস্ব সংবাদদাতা হবিগঞ্জ থেকে জানান, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত দুর্গম পানছড়ি। দিনরাত পরিবেশ বিপন্ন করে পানছড়ি পাহাড়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত আছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান হয়। এতে ভাল ফল আসছে না। জেলা শহরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস থাকলেও তাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বালু উত্তোলনকারীরা ভয়ানক। শুধু তাই নয়, হলুদ সাংবাদিকরাও মাসোহারা পেয়ে থাকেন। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় এলাকার রাস্তাঘাট, টিলা কেটে বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে পানছড়ি এলাকাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ। জানা গেছে, বিভিন্ন টিলার পাশে ও টিলার নিচে ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে বালু দস্যুরা।
এই মেশিনের পাইপ টিলার নিচে প্রবেশ করিয়ে রাখা হয়। আর এর মাধ্যমে তোলা হচ্ছে বালু। পরে একের পর এক ট্রাক্টর বোঝাই করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ গাড়ি বালু বিক্রি করে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালু বিক্রেতারা।
অবাধে বালু উত্তোলন করায় পানছড়ি পাহাড়ে কাঁপছে টিলা। একইভাবে লালচান্দ বাগান এলাকার ছড়া ও টিলা থেকে ড্রেজারে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এতে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালুখেকো ওই চক্রটি। বালুদস্যুরা খুবই প্রভাবশালী।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, অবৈধ বালু তোলা বন্ধে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করছে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। হবেও না।