তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্ট এলাকায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মূল অবকাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত ফ্লাড বাইপাস এলাকায় ৪৭টি অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এলাকার প্রভাবশালীরা এগুলো অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, দোয়ানির তিস্তা ব্যারাজের অধিগ্রহণ করা জমিতে নির্মিত বৈরালী রেস্তরাঁসহ ৪৭টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করতে তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে পুলিশ, আনছার, বিজিবি ও র্যাবসহ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অচিরেই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।
সামনে বর্ষা মৌসুম। তিস্তায় উজানের ঢল আসবে। তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে ফ্লাড বাইপাস এলাকায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
সোমবার পাউবোর নীলফামারীর ডালিয়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিস্তা ব্যারাজের অধিগ্রহণ করা জমিতে ৪৭টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এটি নীলফামারী জেলার ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন হলেও জায়গাগুলো পড়েছে লালমনিরহাট জেলার সীমানায়।
সূত্র মতে, তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসের পাঁচ নম্বর চেকপোস্ট এলাকায় ২ একর ৪৯ শতক জমি অবৈধভাবে দখল করেছে স্থানীয় বেশ কিছু প্রভাবশালী। এর মধ্যে ফ্লাড বাইপাসের ২৫ শতক জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বৈরালী নামের একটি রেস্তরাঁ। এটি বড় পাকা স্থাপনা। যা তিস্তা ব্যারাজের মূল অবকাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত ফ্লাড বাইপাসের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এ ছাড়া অপর ৪৬টি অবকাঠানো গড়ে তোলা হয়েছে টিনশেডের ঘর বানিয়ে। অবৈধ দখলদারদের কয়েক দফায় স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিস করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড অবৈধ দখলদারদের একটি তালিকা করেছে। সেখানে ৪৭ জনের নাম রয়েছে। এদের মধ্যে বৈরালী রেস্তরাঁর মালিক আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে শ্যামল। তিনি গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।
পাউবোর ডালিয়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, তিস্তা ব্যারাজের অধিগ্রহণ করা জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা অপসারণ ও উচ্ছেদ করতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, আমরা আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদের জন্য লালমনিরহাট জেলা প্রশাসককে কয়েক দফা পত্র দেই। এর পর অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদের বিষয়ে চলতি বছরের ১২ মার্চ লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ জারি করেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নীলফামারীর ডালিয়া পাউবো জোনের আওতায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার দোয়ানিতে অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিকনির্দেশনা দিয়ে সরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমি ও ইমারত দখল পুনরুদ্ধারের জন্য অত্র অফিসের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবেল রানা, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ আল সোহান এবং সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজকে দায়িত্ব প্রদান করেন। তবে কবে থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে তা পত্রে উল্লেখ করা নেই।