
মর্মসিংহ বলী খেলা
ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং, চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু (বৈ-সা-বি) এবং বাঙ্গালীর চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ উৎসব। এ সকল উৎসবে বহুমুখী কৃষ্টি সংস্কৃতির বর্ণিল শোভায় শোভিত হয় সমগ্র পার্বত্য অঞ্চল। এরই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকায় প্রথম বারের মত আয়োজন করা হয় মর্মসিংহ ত্রিপুরা বলি খেলার।
বৈসু-সাংগ্রাইং-বিজু(বৈসাবি) ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন বলি খাগড়াছড়ির মর্ম সিংহ ত্রিপুরার সহযোগীতায় মঙ্গলবার এলাকাবাসী এ বলী খেলার আয়োজন করে। এ সময় খেলায় অংশ নেন খাগড়াছড়ি জেলার ১৫ জন বলী। বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত কয়েক হাজার দর্শক এই খেলা উপভোগ করেন। খেলায় হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল পুরো মাঠ।
একে একে অন্যান্য বলীদের পরাজিত করে বিজয়ী হন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার দক্ষিণ খবং পড়িয়ার সৃজন চাকমা,দ্বিতীয় হন ঠাকুরছড়ার লিমন ত্রিপুরা এবং তৃতীয় দক্ষিণ খবং পড়িয়ার তপন চাকমা। এর আগে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী বিষয়ক টাক্স ফোস চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা.এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এ খেলার উদ্ধোধন করেন।
চ্যাম্পিয়ন সৃজন চাকমা বলেন, তিনি নিয়মিত খেলেন না। তবে বলীখেলার কয়েকটি আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। এখানে জিতেও তাঁর ভালো লাগছে। ছেলেকে নিয়ে বলীখেলা দেখতে এসেছেন সাধন বিকাশ চাকমা। তিনি বলেন, ছেলে কখনো বলী খেলা দেখেনি। ছেলেকে বলী খেলা দেখাতে নিয়ে আসলাম।
এদিকে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলি খেলার আদলে খাগড়াছড়িতে মর্মসিংহ ত্রিপুরা বলী খেলাটি যাতে আয়োজন করা হয় এমনটি দাবী খেলোয়াড় ও দর্শকদের। বৈসু ও বিসিকাতাল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক, খগেন্দ্র ত্রিপুরা ও আয়োজক কমিটি অন্যতম সদস্য মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলি জানান, মর্ম সিং বলী খেলা এবারই প্রথম বারের মতো আয়োজন। স্পন্সর পেলে সামনে বছর থেকে বৈসু উপলক্ষে প্রতি বছর এই বলী খেলার ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করা হবে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ২৯৮ নং সংসদীয় আসন, খাগড়াছড়ি’র সংসদ সদস্য , কুজেন্ত্র লাল ত্রিপুরা বলেন বৈসাবি উপলক্ষে বলী খেলা পাহাড়ের কৃষ্টি সংস্কৃতির অংশ। মাঝে এ খেলাটি পার্বত্য অঞ্চল হতে হারিয়ে যাচ্ছিল।
আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির এ সব খেলাধূলা যাতে হারিয়ে না যায় সে বিষয়ে সরকার আন্তরিক ভাবে কাজ করছে ।পাহাড়ের লুপ্ত ও লুপ্ত প্রায় কৃষ্টি ও সংস্কৃতি উদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এ সংসদ সদস্য। খেলা শেষে পুরস্কার তুলে দেন টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান সংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মর্ম সিং ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ সদস্য কল্যান মিত্র বড়ুয়া, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা প্রমূখ।
এমএস