ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

অধ্যক্ষের সঙ্গে সভাপতির বিরোধ, বিছিন্ন সিসিটিভির সংযোগ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালকিনি, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১৬:২২, ২৫ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৬:২৭, ২৫ নভেম্বর ২০২২

অধ্যক্ষের সঙ্গে সভাপতির বিরোধ, বিছিন্ন সিসিটিভির সংযোগ 

সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ছবি: জনকণ্ঠ

মাদারীপুরের কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষের অফিস রুমের সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়, শিক্ষকদের বেতন বকেয়া, নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও অধ্যক্ষের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের বিষয়সহ সভাপতির সঙ্গে অধ্যক্ষের বিরোধের জের ধরে এ সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্ন করা হয়। 

এদিকে এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্নের ঘটনা নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন অধ্যক্ষ। 
 
কলেজ সুত্রে জানা গেছে, দক্ষীন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাসানুল সিরাজীর অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়, অধ্যক্ষের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ, প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া, ননএমপিও শিক্ষকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও নতুন শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। 

এর জের ধরে গত ২১ নভেম্বর দুপুরে অধ্যক্ষের অফিস রুমের সিসিটিভির সংযোগ সভাপতি ও তার লোকজন বিছিন্ন করেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। 

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অপরদিকে সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্নের ঘটনা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কলেজের শিক্ষক বলেন, আমরা এই কলেজে ২৮ জন নন এমপিও শিক্ষক রয়েছি। এবং আমরা প্রায় ২০ মাস যাবত কলেজ থেকে কোন বেতন পাচ্ছি না। তাই আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। 

নজরুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, সভাপতি ও অধ্যক্ষের দ্বন্দ্বে দক্ষিণ অঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে আমরা এর সমাধান চাই।

ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপিত আবুল কালাম আজাদ বলেন, অধ্যক্ষের অফিস রুমের সিসিটিভির সংযোগ সভাপতি বিছিন্ন করেছেন বলে আমি জানতে পেরেছি। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তবে আমরা খুব শিগগিরিই এ বিষয়টি নিয়ে বসবো। 

অধ্যক্ষ মো. হাসানুল সিরাজী বলেন, আমাকে দিয়ে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করার চেষ্টা, আমার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ, প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে আমার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সভাপতির সিদ্ধান্ত আমার উপরে চাপিয়ে দেয়া, প্রাতিষ্ঠানিক রুটিন প্রণয়ন, বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনকি অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাসমূহের কমিটি গঠনসহ অধ্যক্ষের এক্তিয়াারভুক্ত বিষয়গুলিতে অযাচিত হস্তক্ষেপসহ সকল বিষয়ে সভাপতি তার নিজের পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সভাপতির সঙ্গে আমার মত পার্থক্য চলে আসছে। তাই সে আমার অফিস রুমের সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্ন করছে। 

আমি এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরকে জানিয়েছি। তবে শিক্ষকদের বকেয়া বেতনের বিষয়ে তিনি জানান, কলেজে ব্যয় অনুয়ায়ী আয় নেই তাই শিক্ষকদের বেতন দেয়া যাচ্ছে না। 

উপজেলা চেয়ারম্যান ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মীর গোলাম ফারুক বলেন, অধ্যক্ষের রুমের সিসিটিভির কোন লাইন বিছিন্ন করা হয় নাই। আসলে অধ্যক্ষ কলেজটি ধ্বংস করে দিতেছে।
 
এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, অধ্যক্ষের অফিস রুমের সিসিটিভির সংযোগ বিছিন্ন করার বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডেকে এ বিষয়টি দেখার জন্য বলে দিয়েছি। এবং আমি এ বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছি।   

এসআর

×