ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চার ম্যাচ হাতে রেখে রিয়াল মাদ্রিদের ৩৬তম শিরোপা

​​​​​​​স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:২৭, ৫ মে ২০২৪

চার ম্যাচ হাতে রেখে রিয়াল মাদ্রিদের ৩৬তম শিরোপা

স্প্যানিশ লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলাররা

অনুমিতভাবেই স্প্যানিশ লা লিগার ২০২৩-২৪ মৌসুমের শিরোপা জয় করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবার রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা তাদের ম্যাচে জিরোনার কাছে - গোলে হেরে যাওয়ায় চার ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগার রেকর্ড ৩৬ নম্বর ট্রফি নিশ্চিত হয়ে যায় গ্যালাক্টিকোদের। এর ফলে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করেছে রিয়াল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সিলোনার শিরোপাসংখ্যা ২৭টি। চলতি মৌসুমে রিয়ালের ট্রফি হয়েছে দুটি। গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সিলোনাকে - গোলে হারিয়ে মৌসুমে প্রথম ট্রফির স্বাদ পায় তারা।  

বার্সা-জিরোনা ম্যাচের আগে নিজেদের খেলায় কাদিজকে - গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসবের প্রহর গুনছিল মাদ্রিদ জায়ান্টরা। নিজেদের জয়ের ঘণ্টাতিনেক পর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সা হেরে গেলে শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের। অর্থাৎ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে কাদিজকে হারিয়ে পয়েন্টের অপেক্ষায় ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই অপেক্ষার পালা ফুরাতে বেশি সময় লাগেনি। কাদিজকে হারানোর পর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার চেয়ে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে যায় রিয়াল। ওই সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সিলোনা হেরেই যায় জিরোনার মাঠে। বর্তমানে ৩৪ ম্যাচে ২৭ জয়, ড্র হারে রিয়ালের পয়েন্ট ৮৭। সমান ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠেছে জিরোনা। ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা। রিয়াল জিরোনার মাঝে এখন পয়েন্টের ব্যবধান ১৩। রিয়াল যদি তাদের বাকি চার ম্যাচে হারে এবং জিরোনা নিজেদের চার ম্যাচে জয়ও পায় তবু রিয়ালকে ছুঁতে পারবে না তারা। 

এবারের আগে সবশেষ রিয়াল লা লিগা জিতেছিল ২০২১-২২ মৌসুমে। এক মৌসুম পরই মুকুট পুনরুদ্ধার করেছে তারা। এবারের মৌসুমে রিয়ালের লিগ জয় বিশেষ কিছু। কেননা মৌসুমের শুরু থেকে একের পর এক ফুটবলার ছিটকে পড়েন চোটের কারণে। অনেক ম্যাচেই জোড়াতালি দিয়ে একাদশ সাজাতে হয় কোচ কার্লো আনচেলোত্তিকে। মূল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে প্রায় পুরোটা সময়ই পায়নি তারা। তার জায়গায় সুযোগ পেয়ে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেন ইউক্রেনের গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। যিনি ছিলেন মূলত তৃতীয় পছন্দের গোলরক্ষক। চোট কাটিয়ে কাদিজের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে মৌসুমে প্রথমবার গোলপোস্টে দাঁড়ান কোর্তোয়া। ফেরার দিনেই লিগ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

দুই মেয়াদে রিয়ালের কোচ হিসেবে আনচেলোত্তি জিতেছেন ১২টি ট্রফি। এর মধ্যে দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি ক্লাব বিশ্বকাপ, দুটি লা লিগা, দুটি কোপা ডেল রে, দুটি উয়েফা সুপার কাপ, দুটি স্প্যানিশ সুপার কাপ। রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি ট্রফি জয়ের রেকর্ডে কারিম বেঞ্জামা মার্সেলোর পাশে বসেছেন  বর্তমান অধিনায়ক নাচো ফার্নান্দেজ অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার লুকা মডরিচ। প্রতেকে জিতেছেন ২৫টি করে ট্রফি। ক্রোয়েট তারকা মডরিচ আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন। রিয়ালের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগায় খেলেছেন তিনি। কাদিজের বিরুদ্ধে ম্যাচের সময় মডরিচের বয়স ছিল ৩৮ বছর ২৩৮ দিন। এর মাধ্যমে তিনি ১৯৬৫ সালের হাঙ্গেরিয়ান তারকা ফেরেঙ্ক পুসকাসকে মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন।

এবার রিয়ালের এবারের লিগ জয়ে বড় অবদান রেখেছেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম। রিয়ালে অভিষেক মৌসুমেই দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন তিনি। কাদিজের বিরুদ্ধেও বদলি নামার দুই মিনিট পরই গোল করেন তিনি। ম্যাচে রিয়ালের হয়ে বাকি গোল দুটি করেন ব্রাহিম দিয়াজ জোসেলু। এবারের লিগে এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচে বেলিংহামের গোল ১৮টি। দুই গোল বেশি করে তার ওপরে আছেন কেবল জিরোনার আর্টেম ডোভিক। তবে ২০ গোল করতে বেলিংহামের চেয়ে ম্যাচ বেশি খেলেছেন তিনি। আগামী সপ্তাহে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচ সামনে রেখে রিয়াল কোচ আনচেলোত্তি কাদিজের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ তারকাকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন। ম্যাচ শেষে আনচেলোত্তি বলেন, এবারের লা লিগা আমাদের দারুণ কেটেছে। আমরা অল্প কিছু ভুল করেছি। কিন্তু আবার সেগুলো শুধরে ওঠারও চেষ্টা করেছি। এই শিরোপাটা আমাদের প্রাপ্য ছিল।

রিয়াল স্ট্রাইকার জোসেলু বলেন, দিনটির জন্য আমরা মুখিয়ে ছিলাম। নিজেদের ম্যাচের পরও আমরা মাঠ ছাড়িনি; শিরোপা জয়ের অপেক্ষা করেছি। দলে বেশ কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় আছে যারা শিরোপার জন্য ক্ষুধার্ত ছিল। পুরনো অনেক খেলোয়াড় আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এটা সত্যিই বিশেষ এক মুহূর্ত।

×