
ছবি : সংগৃহীত
ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘিরে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপ। সম্প্রতি ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশটিতে অবস্থানরত অবৈধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। এর ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মেঘালয়সহ বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া লক্ষাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে ‘পুশব্যাক’ শুরু করেছে। যদিও এখন পর্যন্ত বড় কোনো আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তবে সূত্র বলছে, আগস্ট মাসের পর থেকে অভিযান আরও জোরালো হবে।
এ অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আত্মগোপনে থাকা নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ। জানা গেছে, ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগ নেতাদের ২-৩ মাস সময় দিতে চায় নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে। তবে অনেকেই ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, এবং প্রায় ৫০ জন বড় নেতা ভারত ছেড়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দেশ রূপান্তরকে জানান, দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তারা দেশে ফিরতে পারছেন না, আবার ভারতে টিকে থাকাও ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির পাশাপাশি *ভারতের পার্লামেন্টে অনুপ্রবেশ আইন আরও কঠোর* হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে।
ভারতে পলাতক নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, দেশের পরিস্থিতি এখনো অনুকূলে নয়। অনেকেই পরিবারসহ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আর সেখানে থেকে জীবনযাপনও একপ্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এবং তিনি আশ্রয়ে থাকা নেতাদের *ভারত ত্যাগ করে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন*। এই নির্দেশনায় নেতাকর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, কারণ দেশে ফিরলে নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়, আর ভারতে থাকলে রয়েছে গ্রেপ্তার ও ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি।
দেশটির সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির পুশব্যাক প্রক্রিয়া নিয়ে বলেন, “ধাক্কাধাক্কি না করে নিয়ম মেনে ফেরত পাঠানোই উচিত। তবে এখন দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষকেই বেশি পাঠানো হচ্ছে, দলের নেতাদের নয়।”
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা আশ্রয় নিয়েছেন। এদের বেশিরভাগই চলতি বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তবে এখন ভারত সরকারের কড়া অবস্থানে তাদের জন্য ভারতের মাটিও হয়ে উঠছে অনিরাপদ।
আগামী আগস্টের পর থেকে বড় পরিসরে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। ফলে সময় গুনছেন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা, ভারত ছাড়বেন, না দেশে ফিরবেন?
আঁখি