
ছবি : সংগৃহীত
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বিশ্লেষক অধ্যাপক শহীদুজ্জামান। আলোচনায় উঠে আসে সাবেক এরাষ্ট্রপতির বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় তার ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন।
শহীদুজ্জামান বলেন, "ব্যাংককে সে গেছে ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট নিয়ে। সে যদি সেখানেই থাকে, তাহলে বাংলাদেশের সরকার তার কাউন্টার পার্টির সঙ্গে কথা বলে তাকে হাতকড়া পরিয়ে ফেরত আনুক, এটাই মানুষ দেখতে চায়।"
তিনি দাবি করেন, এই ব্যক্তি ছিলেন দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার সুবিধাভোগী, যিনি শুধুমাত্র সরকারের অবৈধ শাসনকে টিকিয়ে রাখতে নয়, বরং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পথেও বড় বাধা ছিলেন। তাঁর ভাষায়,
“এই লোকটা ছিল আওয়ামী লীগের টর্চার মেশিনের প্রতীক। তার ভূমিকা ছিল সর্বনাশা।”
এ ঘটনায় তিনি সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,
“যদি এই ব্যক্তি গোপনে দেশ ছাড়তে পারে, তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অজান্তে তা কীভাবে সম্ভব? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি বলে তিনি জানেন না, তাহলে তাকেই আগে পদত্যাগ করতে হবে। এটা তো স্পষ্টতই একটি ষড়যন্ত্রমূলক নাটক।”
অধ্যাপক শহীদুজ্জামান আরও বলেন, তরুণরা এখন দেশের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে মাঠে নেমেছে, যারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। তিনি বলেন,
“আমি তরুণদের ব্যাপারে দুর্বল ফিল করি। কারণ ওরা এখনো নৈতিকতায় বিশ্বাস করে, ওদের মধ্যে নির্মোহতা আছে।”
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন আইনের শাসন এবং বিচার নিশ্চিত করা। যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, তাদের ভুলে গেলে চলবে না। শহীদুজ্জামান বলেন,
“আমরা খুব সহজে ভুলে যাই অতীতের অন্যায়, নির্যাতনের ইতিহাস। কিন্তু যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তারা আজও নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
এ সময় তিনি সামরিক বাহিনীতে সংস্কারের দাবিও তুলেন। তার মতে,
“বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, যে জায়গায় সংস্কার দরকার, সেখানে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সামরিক বাহিনীর মধ্যে অন্যায় আর অবিচারের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে—এটা ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।”
সবশেষে তিনি বলেন,
“আমরা কি চাই আবার সেই পুরনো পথে ফিরে যেতে? যদি সংবিধান একই থাকে, তাহলে ফ্যাসিজমের কবল থেকে সামরিক বাহিনীকে মুক্ত না করলে সামনে নতুন সংকট তৈরি হবে।”
আঁখি