
ছবি: সংগৃহীত
চীন
যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যদ্বাণী করে চীনা প্রেসেডিন্ট শি জিনপিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) লেখেন, “চীন জানে যে মহাশক্তিগুলো তাদের যুদ্ধযন্ত্রের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পূর্বেকার রাজবংশের ধ্বংসের ইতিহাস স্মরণ করুন। যুদ্ধবাজ মনোভাব কীভাবে একটি জাতিকে ধ্বংস করেছে। পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, যা আমেরিকা শিখতে অস্বীকার করে। সাম্রাজ্য শত্রুর কারণে পতন হয় না, তারা তাদের যুদ্ধযন্ত্রের অতৃপ্ত ক্ষুধার নিচে ভেঙে পড়ে। ৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি দিয়ে বিশ্বকে ঘিরে রাখা এবং প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার ধোঁয়ায় উড়ে যাচ্ছে। আপনি (মার্কিন সাম্রাজ্য) কি ইতোমধ্যে আপনার প্যারেডে সেই প্রেতাত্মার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?”
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার প্রসিডেন্ট কিম জং-উন বলেন, “এই যুদ্ধে ইরান একা নয়। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ প্রস্তুতির সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা কঠিন সময়ে আমাদের মিত্রদের ত্যাগ করি না। আমরা ইরানকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন এবং চাপ নীতি আমাদের জানা। আমরা আমাদের বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়ে আছি।”
তুরস্ক
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তায়েফ এরদোয়ান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, “ইসরায়েল, যারা পশ্চিমের সীমাহীন সমর্থন নিয়ে ইরান আক্রমণ করেছিল, ইউনিফাইড গাজা, এবং এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশে গুন্ডামি করেছিল, আসলে তারা জানে না যে তারা কি করছে৷ হয়তো তারা ভবিষ্যতে সে ভুল বুঝতে পারবে, কিন্তু আমরা ভয় পাই সেই সময়ের জন্য কাজটা অনেক দেরি হয়ে যাবে৷ এটা ভুলে গেলে চলবে না যে প্রাচীন ভূগোলে কোন দেশই তার নিজস্ব সীমানা ও প্রশাসন দিয়ে গঠিত নয়। ফিলিস্তিনের মানুষ এবং তাদের জমিতে আক্রমণ করা শুধুমাত্র কয়েক মিলিয়ন মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ একটি ঘটনা নয়। আবার, ইরানের ভূমি ও মানুষের উপর আক্রমণ শুধুমাত্র ইরান রাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগজনক ঘটনা নয়৷ ইসরাইল তার অস্তিত্ব এবং তার সমাজের ভবিষ্যতকে ধাপে ধাপে ঝুঁকিতে ফেলছে, প্রতিটি অত্যাচার, প্রতিটি রক্ত দিয়ে, প্রতিটি অপরাধের সাথে। নিষ্ঠুরতার শেষ পরিণতি গভীর আক্ষেপ।”
রাশিয়া
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কৌশলগত সমর্থন ও মধ্যস্থতার ভূমিকায় থাকলেও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন “ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করলে তা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে৷” এছাড়া গতকাল রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেন “ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেও সতর্ক করছি৷”
পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ গত ১৪ জুন দেশটির জাতীয় পরিষদে দেওয়া তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা ইরানের পাশে আছি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা সমর্থন দিয়ে যাব। ইসরায়েল তার হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে ইরান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনকে। এই মুহূর্তে যদি মুসলিম জাতিরা ঐক্যবদ্ধ না হয়, তবে তাদেরও একই ভাগ্য বরণ করতে হবে। সব মুসলিম দেশকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান করছি। এ বিষয়ে একটি যৌথ কৌশল প্রণয়নে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জরুরি বৈঠকের আহ্বান করছি৷ ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং ইসলামাবাদ এই কঠিন সময়ে তেহরানের পাশে থাকবে।”
তবে ৫ দিনের মাথায় সূর বদল করে পাকিস্তান৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ১৯ জুন জানান, “ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে পাকিস্তান কারো পক্ষ নেবে না৷ এই মুহূর্তে আমরা ইসরায়েলকে পাকিস্তানের জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছি না। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তবে এখনই এমন আশঙ্কা করছি না।”
তথ্যসূত্র: জাতীয় ও আন্তজার্তিক গণমাধ্যমসমূহের নিউজ থেকে প্রেসিডেন্ট/পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বক্তব্যের খন্ডাংশ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া প্রেসিডেন্টদের বক্তব্য৷ লেখকঃ শিক্ষার্থী, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়৷
সাব্বির