ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

গাজায় তীব্র খরা: ‘শিশুদের মৃত্যু শুরু হবে পিপাসায়’, ইউনিসেফের সতর্কবার্তা

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৬:১০, ২০ জুন ২০২৫

গাজায় তীব্র খরা: ‘শিশুদের মৃত্যু শুরু হবে পিপাসায়’, ইউনিসেফের সতর্কবার্তা

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে পড়া গাজা উপত্যকায় পানির সঙ্কট ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। অঞ্চলটির পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে, যার ফলে মানবসৃষ্ট খরার মুখোমুখি হচ্ছে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। এই অবস্থাকে ‘জরুরি মানবিক বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের শিশু তহবিল—ইউনিসেফ হুঁশিয়ার করেছে, খুব শিগগিরই শিশুদের পিপাসায় মৃত্যু শুরু হতে পারে।

জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেন, ‘শিশুরা এখন পানির জন্য কাঁদছে, খুব শিগগিরই তারা পিপাসায় মারা যাবে।’ তিনি জানান, গাজায় বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ পানি উৎপাদন কেন্দ্র কার্যকর অবস্থায় আছে। এর বাইরে বাকিগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে বা জ্বালানি সংকটে বন্ধ।

ইউনিসেফ জানায়, অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলা, অবরোধ এবং স্থল অভিযানে গাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থা একপ্রকার অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে শিশুদের জন্য এই পরিস্থিতি মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জেমস এল্ডার। তার ভাষায়, ‘এই খরার পেছনে প্রাকৃতিক কোনো কারণ নেই, এটি একেবারেই মানবসৃষ্ট—যুদ্ধের ফল।’

প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকায় প্রায় ১০ লাখ শিশু বসবাস করে, যাদের বেশিরভাগই বর্তমানে বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই সংকট নিরসনে জরুরি মানবিক করিডর খোলার আহ্বান জানালেও, ইসরায়েলের অবরোধ শিথিলের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

জাতিসংঘ বারবার বলছে, খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদা থেকে গাজাবাসীদের বঞ্চিত করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই মানবসৃষ্ট খরা শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়, গণহত্যার নতুন রূপ হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই পাবে।

 

সূত্র: আল জাজিরা।

রাকিব

×