
বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে বারোমাসিয়ার দুপারের মানুষ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২২০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বারোমাসিয়া নদীর দুপাড়ের হাজারও মানুষ। সাঁকোটি এক মাস আগে ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি নিয়ে নদী সাঁতরিয়ে পারাপার হচ্ছেন দুপাড়ের হাজারও মানুষ। সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে শিশু, শিক্ষার্থী আর নারীরা। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত না করলে বর্ষার সময় মানুষের আরও দুর্ভোগ বাড়বে। ফুলবাড়ী, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীতে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুই পারের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। শিশু আর নারীরা সাঁতরিয়ে পার হচ্ছে।
দুপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বারোমাসিয়া নদীর দুপাড়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে খেয়া নৌকায় পারাপার হতো। এখানে ছিল ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। এক দশক আগে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষ একটি বাঁশের সাকো তৈরি করে চালাচল শুরু করে। প্রতি বছর বর্ষার আগেই স্থানীয়রা যাতে বর্ষা মৌসুমে ভালোভাবে নদী পারাপার করতে পারে সে জন্য বাঁশের সাকোটি মেরামতও করে। তবে এ বছরও মেরামতের প্রস্তুতি নিয়েছিল স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ২৫ থেকে ২৬ দিন আগে হাঠাৎ টানা বৃষ্টি ও ঢলের পানির স্রোতে নড়েবড়ে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়ে দুপাড়ের হাজার হাজার মানুষ। দুপাড়ের মানুষ কেউ সাতরিয়ে কেউ এক বুক নদীর পানি মাড়িয়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছে। নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী, চরগোরকম-ল, ঝাঁউকুটি, পশ্চিম ফুলমতি, নাওডাঙ্গা ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের হকবাজার এবং পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাহাট ইউনিয়নের চরখারুয়া এবং খারুয়াসহ ৮ গ্রামের হাজারও মানুষ এই নদী দিয়ে পাড়াপার হয় প্রদিদিন।
কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার আহের আলী ও ঝাউকুটি এলাকার নুর ইসলাম জানান, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার প্রায় এক মাস হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত ভাঙা সাঁকোটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা প্রতিদিন সাইকেল কাঁধে নিয়ে পারাপার হচ্ছি। মর্জিনা বেগম ও জাহানারা বেগম জানান, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা পানি ভেঙে কাপড় ভিজিয়ে এই নদী পার হচ্ছে। আমাদের দেখার কেউ নেই। চর খারুয়া এলাকার শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, খারুয়া এলাকার মাসুদ রানা ও ঝাউকুটি এলাকার শিক্ষার্থী হাসানুর রহমান জানায় আমরা ছোট মানুষ সাঁতরিয়ে পার হচ্ছে। স্কুল খুললে বাধ্য হয়ে কাপড় ভিজিয়ে নদী পার হতে হবে। তারা দ্রত সাঁকোটি মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয়রা জানান এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ পারাপার হয়। এখন পর্যন্ত সাঁকোটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য, আমিনুল হক ও স্থানীয় কৃষক হামিদুল ইসলাম (৬৩) জানায় ঢলের পানির তীব্র স্রোতে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের চরম দুর্ভোগের পোহাতে হচ্ছে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, তীব্র স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুপাড়ের মানুষ পারাপারের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের ছেলে-মেয়েরা পার হতে পারছেন না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলা জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এরপর বরাদ্দ আসলে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো পুনর্নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।
প্যানেল