টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও একমাত্র মালিক পাভেল দুরভ জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর তার বিপুল সম্পদ তিনি ভাগ করে দেবেন নিজের ১০০ জনেরও বেশি সন্তানের মধ্যে। ফরাসি ম্যাগাজিন Le Point-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এই রাশিয়ান টেক উদ্যোক্তা বলেন, তিনি চান তার সব সন্তান সমান অধিকার পাক এবং তাদের মধ্যে যেন কোনো দ্বন্দ্ব না হয়।
৪০ বছর বয়সী দুরভ বলেন, “আমি চাই না আমার মৃত্যুর পর তারা একে অপরকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলুক।”
দুরভ জানান, বিভিন্ন দেশে তার শুক্রাণু দানের মাধ্যমে ১০০-র বেশি সন্তানের জন্ম হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনজন ভিন্ন নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া তার ছয়জন ‘অফিশিয়াল’ সন্তান রয়েছে। তবে তাদের কেউই আগামী ৩০ বছর তার সম্পদে হাত দিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন এই বিলিয়নিয়ার।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমি চাই তারা সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করুক, নিজের চেষ্টা দিয়ে নিজেকে গড়ে তুলুক, আত্মবিশ্বাস অর্জন করুক এবং নিজের সৃজনশীলতা বিকশিত করুক। শুধুমাত্র একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ওপর নির্ভর করে জীবন গড়ুক, এটা আমি চাই না।”
দুরভ আরও বলেন, সম্প্রতি তিনি তার উইল বা ইচ্ছাপত্র তৈরি করেছেন। কেন এই মুহূর্তে তা করলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে নামলে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর ভেতরেও আপনি অনেক শত্রু তৈরি করে ফেলেন।”
বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাসকারী দুরভ গত বছর ফ্রান্সে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে তিনি যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি। যদিও দুরভ এসব অভিযোগকে “পুরোপুরি অযৌক্তিক” বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, “যেহেতু অপরাধীরা আমাদের মেসেজিং অ্যাপটি ব্যবহার করে, তা বলে অ্যাপের পরিচালকদেরই অপরাধী বানানো যায় না।”
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত দুরভের টেলিগ্রাম বর্তমানে প্রতি মাসে এক বিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী সেবা নিচ্ছে। গোপনতা রক্ষা ও নিরাপদ বার্তা আদান-প্রদানের জন্য অ্যাপটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়।
বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা শতাধিক সন্তানের মধ্যে সম্পদ বণ্টনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে নিজের ব্যতিক্রমী দৃষ্টিভঙ্গিই তুলে ধরেছেন পাভেল দুরভ। সম্পদ নয়, সন্তানদের ব্যক্তিত্ব গঠনে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এই টেক উদ্যোক্তা যেন সমাজে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
সূত্র:https://tinyurl.com/ms54aazr
আফরোজা
