ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

কমছে বেকার

প্রকাশিত: ২০:২৯, ৩১ মার্চ ২০২৩

কমছে বেকার

.

দেশে বেকারের সংখ্যা কমার খবরটি আশাব্যঞ্জক। বিগত বছরে বেকারত্ব পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। করোনা পরবর্তী বিরূপ বিশে^ মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফনে আমাদের দেশে কর্মহীন ব্যক্তির সংখ্যা কমার বিষয়টি বড় সুসংবাদ। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবিএসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিগত পাঁচ বছরে শ্রমবাজারের সূচকগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। শ্রমশক্তিতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের হারে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে এবং কর্মে নিয়োজিত বিশেষ করে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। যুব জনগোষ্ঠীর শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ বেড়েছে। কৃষি এবং সেবাখাতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বেড়েছে।

পৃথিবীর সর্বত্রই শ্রমবাজারের একটি সুনির্দিষ্ট আকার থাকে। নতুন কলকারখানা গড়ে না উঠলে কিংবা নতুন অর্থনৈতিক উদ্যোগ না নেওয়া হলে শ্রমবাজারে যুক্ত হতে প্রস্তুত শ্রমজীবীর স্থান সংকুলান অসম্ভব হয়ে ওঠে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সারা বিশ্বে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। করোনাউত্তর পরিবেশে পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াবে, অর্থনৈতিক মহামন্দা কোন পর্যায়ে পৌঁছবে তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের মতো একটি জনসংখ্যাবহুল দেশে চাকরির বাজার ইতোমধ্যেই সংকুচিত হয়ে এসেছে। একটি পদের বিপরীতে ৩০ থেকে ৩৫ জন প্রার্থী দাঁড়িয়ে যাওয়ার বাস্তবতা আগে থেকেই বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষা নিয়ে কাক্সিক্ষত বা প্রত্যাশিত চাকরিতে প্রবেশে ব্যর্থ হয় অধিকাংশ প্রার্থী। ফলে বাধ্য হয়ে বহু চাকরিপ্রার্থীকে এমন একটি পেশায় জড়িয়ে পড়তে হয় যে পেশার সঙ্গে তার অধীত বিদ্যার সম্পর্ক মেরুদূর। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই একজন নবীন চাকুরের কাছ থেকে মানসম্পন্ন সার্ভিস পেতে ব্যর্থ হয় চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান।

বিশ্বায়নের ফলে স্বদেশে কাজ না পেলে বিদেশে গিয়ে কাজ খুঁজে নেওয়ার সুযোগ থাকে। করোনাভাইরাসের কারণে এখন বিশ্বের শ্রমবাজারেও সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের বাইরে কাজের স্থান সংকুচিত হয়ে আসছে। এমন একটি বাস্তব পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে স্বকর্মসংস্থানের কারণে দেশে যে বেকারের সংখ্যা কমে আসছে, ব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই। আমরা স্মরণ করতে পারবো যে কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

মনে রাখা চাই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) কারণে ফুলটাইম বা পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে পারেন বিশ্বের অন্তত ৩০ কোটি মানুষ, সম্প্রতি বহুজাতিক ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাশের এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এআই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বাজারের এক-চতুর্থাংশ চাকরি দখল করতে পারে। তবে এআইর হাত ধরে কাজের নতুন ক্ষেত্র এবং উৎপাদনশীলতাও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছিল সংস্থাটি। বাংলাদেশে এআই এখনো কোনো হুমকি নয়। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে দেশে বেকারের সংখ্যা আরও কমে আসবে। সুষ্ঠু বিনিয়োগের ভেতর দিয়ে শ্রমবাজারে বিপুল সংখ্যক নতুন কর্মীর অন্তর্ভুক্তি ঘটবে।

×