
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে শুরু হয়েছে বিশেষ মহড়া ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা। ‘ফাস্ট টেন দ্য ট্রেইনার’ শীর্ষক এই কার্যক্রমে মার্কিন সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা সরাসরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থা ও জরুরি সেবা প্রদানকারীদের।
চট্টগ্রাম বন্দরে অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বন্দরের এনসিটিজেডিটিতে। ৯ জুন থেকে শুরু হওয়া এই চার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী দিন ছিল ১২ জুন। বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগে আয়োজিত এ মহড়ায় মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের শেখানো হয়েছে কীভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো জটিল অবকাঠামোয় দুর্ঘটনার সময় তাৎক্ষণিক ও সমন্বিত প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়। বন্দরে ব্যবহৃত ভারী গ্যান্ট্রি ক্রেন, কনটেইনার মুভারসহ অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতির মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটলে যেন প্রাণহানি কমানো যায়, সেই বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে।
মহড়ায় অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে ছিল ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, বন্দর নিরাপত্তা বিভাগ ও চিকিৎসক দল। প্রশিক্ষণকালে প্রতিটি ইউনিটকে শেখানো হয়েছে কিভাবে দুর্ঘটনাকবলিতদের রেসকিউ করা, দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান এবং দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে পাঠানো যায়। মার্কিন প্রশিক্ষকদের মতে, "আমরা বিশ্বাস করি, যথাযথ ও দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসাই প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর মূল চাবিকাঠি।"
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন, “হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও বাস্তবভিত্তিক মহড়া আমাদের কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করে। এতে দুর্ঘটনার তাৎক্ষণিকতা বোঝা ও প্রতিক্রিয়ার গতি আরও কার্যকর হয়।” তারা জানান, শুধু ফায়ার সার্ভিস বা কোস্টগার্ডই নয়, বন্দরের নিরাপত্তা শাখা এবং চিকিৎসকরা এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন, যাতে সমন্বিতভাবে দুর্ঘটনা মোকাবিলার সক্ষমতা গড়ে তোলা যায়।
চট্টগ্রাম বন্দরের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুধু দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নয়, বরং একটি সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার দিকেও অগ্রসর হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দরে অগ্নি দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো দুর্যোগ ঘটলে তারা আরও দক্ষতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করতে পারবেন।
আফরোজা