
বিদেশে অবস্থানরত কোটি দশ লাখেরও বেশি বাংলাদেশির ভোটাধিকার নিশ্চিত না করে দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমাদের অবস্থান সুদৃঢ়, স্পষ্ট এবং লাউড এন্ড ক্লিয়ার। এখানে কোনো কম্প্রমাইজের জায়গা নেই।”
মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। বক্তব্যে তিনি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বহীনতা এবং দৃশ্যমান পদক্ষেপের অভাবের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নতুন বাংলাদেশের জন্য শুধু দেশে নয়, পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের অধিকাংশেরই নেই এনআইডি, নেই ভোটার তালিকায় নাম। তাই আমরা বলিষ্ঠভাবে দাবি জানাই, বিদেশে থাকা প্রত্যেক বাংলাদেশিকে অবশ্যই ভোটাধিকার দিতে হবে। এখানে কোনো ছাড়ের প্রশ্নই আসে না।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিবর্তনের আন্দোলনে দেশের ভেতরে যেমন সংগ্রাম হয়েছে, তেমনি দেশের বাইরে থেকেও প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের সংখ্যা কোটি দশ লাখের বেশি। কিন্তু এখনো তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে তা শুধু অবিচার নয়, রাষ্ট্রের প্রতি নির্মম উপহাসও বটে।”
জামায়াত আমির বলেন, “এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন কঠিন কিছু নয়। এটা কোনো দীর্ঘ সাধনার বিষয় নয়। শুধু সদিচ্ছার দরকার। নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু আমরা এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। এ নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এক কোটি দশ লাখ প্রবাসী ভোটারকে উপেক্ষা করে যদি বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তা সফল হবে না। তারা ঘাম, শ্রম আর রক্ত ঝরিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠান। এই রেমিট্যান্সই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। মুখে তাদের ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলি, অথচ ভোটাধিকার দিই না এটা এক নির্মম ব্যঙ্গ।”
তিনি বলেন, “আমরা এর পরিসমাপ্তি দেখতে চাই। দেখতে চাই, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে, তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সুযোগ তাদের হাতে পৌঁছেছে। তখনই দেশের অর্থনীতি নতুন এক গতিতে এগিয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।”
সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে ডা. শফিকুর রহমান আবারও জোর দিয়ে বলেন, “প্রবাসীদের অবমূল্যায়ন করলে তার করুণ পরিণতি আমাদের সবাইকে ভোগ করতে হবে। আমরা সেটি চাই না। তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের অবস্থান থাকবে অটল ও আপসহীন। নির্বাচন কমিশনকে আমরা আহ্বান জানাই অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।”
সূত্র:https://tinyurl.com/5n8bkmv2
আফরোজা