
ছবি:সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম এবং দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনীতিকে সচল রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জ্বালানি সরবরাহে নিরবচ্ছিন্নতা এবং যথাসম্ভব সাশ্রয় নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, “বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে আমরা বিদ্যুতের মূল্য আপাতত না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির চাপ কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
এই লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলোর পুনর্মূল্যায়ন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ কমাতে এনার্জি অডিট চালুর ঘোষণা দেন তিনি। গ্যাস উৎপাদনেও জোর দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ এবং ২০২৮ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চলতি হিসাবের ভারসাম্য উন্নতির দিকে। ২০২৫ সালের মার্চ শেষে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ০.৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
তবে সরকারের ব্যয় সংযম নীতির কারণে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, এবং এর ফলে প্রতিশ্রুত বৈদেশিক অর্থায়ন প্রাপ্তিতেও বিলম্ব হচ্ছে। তবুও অর্থ উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, চলতি অর্থবছরের জুন নাগাদ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে।
আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত এখনো তুলনামূলকভাবে কম। তাই রাজস্ব খাতকে গতিশীল ও স্বচ্ছ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
আয়কর রিটার্ন দাখিল এখন আরও সহজ করা হয়েছে অটোমেটেড ব্যবস্থার মাধ্যমে। নতুন কর অফিস স্থাপন, দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল প্রণয়ন, কর আদায় ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং রাজস্ব নীতিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় পৃথক করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
মারিয়া