ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ, ইহরাম বেঁধে মিনায় যাবেন হাজিরা

আজাদ সুলায়মান

প্রকাশিত: ০০:১৪, ৪ জুন ২০২৫

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ, ইহরাম বেঁধে মিনায় যাবেন হাজিরা

পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ বুধবার

পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। নিয়ম অনুযায়ী এদিন হজযাত্রীরা ইহরাম বেঁধে মিনায় যাবেন। জোহরের আগে সবাই মিনায় পৌঁছাবেন। এখানে সারাদিন অবস্থান করবেন তারা এবং ৫ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও হজের দিন ফজর) নামাজ আদায় করবেন। ‘লাব্বায়েক, আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক, লাব্বায়েক লা শারিকা লাকা লাব্বায়েক’ ধ্বনিতে আজ মুখরিত হবে মিনার প্রান্তর। পরেরদিন পালিত হবে ইয়াওমে আরাফা বা আরাফা দিবস। 
এবার প্রচ- দাবদাহের মধ্যে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যথাযথ নিরাপত্তার মাধ্যমে হজে অংশগ্রহণকারীদের পবিত্র নগরী মক্কা থেকে মিনায় নেওয়া হচ্ছে। মিনায় গিয়ে অবস্থানকারী হজ পালনকারীরা বৃহস্পতিবার সকাল সকাল আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান নেবেন। সেখানে তারা সকাল থেকে দিনভর ইবাদত-বন্দেগি ও রোনাজারিতে সময় অতিবাহিত করবেন। আগামীকাল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পবিত্র হজ পালন করতে আসা হজযাত্রীরা এরই মধ্যে মক্কায় এসে পৌঁছেছেন। এখানে রাতযাপন জীবনের এক পরম পাওয়া। হাজিরা নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করবেন। পরদিন ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে তারা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। এরপর সেখান থেকে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন। 
১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন। এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ এবং কোরবানি দেবেন। তারপর মাথা মু-ন বা চুল ছেঁটে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা। প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়।
মিনার আমল সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ৮ জিলহজ মিনায় গমন করেছেন এবং সেখানে জোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ পড়েছেন। ৮ জিলহজ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আর এইদিনে জোহর থেকে ৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত পুরো সময় এক নাগাড়ে সেখানে অবস্থান করা মোস্তাহাব। 
এছাড়াও মিনায় অবস্থানের পুরোটা সময় হাজিরা তালবিয়া, জিকির ও কুরআন তেলাওয়াতে মশগুল থাকেন। এখানে অবস্থানের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। অল্প সময়ও জিকির-আসকার থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। তাই জিকির ও ইবাদতে মগ্ন থাকা মিনার অত্যন্ত জরুরি আমল। অনর্থক গল্প-গুজব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। 
মিনায় অবস্থানকালে বেশি বেশি তালবিয়া ‘লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক...’ এবং আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু পড়া উচিত। সম্ভব হলে এ দোয়াটিও পড়া যেতে পারে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু; ওয়াহুয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িন কাদির। কারণ, এই দোয়াকে হাদিসে সর্বোত্তম দোয়া এবং নবীজিসহ পূর্ববর্তী নবী-রাসুলের দোয়া বলা হয়েছে। 
এই মিনাতে নবী (স.) মদিনাবাসীদের সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেন এবং কালিমার দাওয়াত দেন। অতঃপর তারা মুসলমান হন। মদিনায় ইসলামের প্রচার-প্রসার ও দ্বীনি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মূল প্রক্রিয়াটি এখান থেকে সূচনা হয়। তাই মিনা থেকে দাওয়াতের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য নিয়ত করা উত্তম।

×