
ছবিঃ সংগৃহীত
চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নিষিদ্ধ সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর জন্য গোপনে ২০ হাজার কমব্যাট ইউনিফর্ম তৈরি হচ্ছিল। গত ১৮ মে নগরীর বায়েজিদ এলাকার ‘রিঙ্গু গার্মেন্টস’ থেকে এসব ইউনিফর্ম উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযানে কারখানার মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ইউনিফর্ম তৈরির ঘটনা কেএনএফ-এর সক্রিয় সদস্য সংখ্যা নিয়ে নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। তারা ধারণা করছেন, ৩০০ ইউনিফর্ম তৈরির আদেশ থাকলেও এর পেছনে বড় ধরনের সশস্ত্র প্রস্তুতি রয়েছে এবং কেএনএফ-এর সদস্য সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি হতে পারে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রিঙ্গু গার্মেন্টস তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইউনিফর্ম তৈরির অর্ডার পায়। তবে কার জন্য পোশাক বানানো হচ্ছে, তা তাদের জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তারা বলেন, “যদি জানতাম এগুলো অবৈধভাবে ব্যবহার হবে, তাহলে কোনোভাবেই কাজ নিতাম না।” এদিকে পুলিশের নজর রয়েছে ইউনিফর্মের ক্রেতা মংহাসিং মার্মার ওপর, যাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে কেএনএফ সক্রিয় রয়েছে। বিগত সরকারের শেষদিকে জঙ্গিদের অর্থায়নে সেখানে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর যৌথ বাহিনী টানা অভিযান চালায়। এতে গ্রেপ্তার হয় কেএনএফ ও দেশীয় জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউনিফর্ম তৈরি ও সরবরাহের ঘটনা কেবল দেশের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ নয়। ইউনিফর্মের একটি অংশ দেশের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। তাদের ভাষায়, “যদি ছোট স্কেলে হতো, তাহলে হয়তো ৩০০ ইউনিফর্ম তৈরি হতো। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এটা বৃহৎ পরিসরে পরিকল্পিত। ফলে এটা স্থানীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক ভূরাজনীতির জন্যও হুমকিস্বরূপ।”
চলতি মাসেই ইউনিফর্ম সরবরাহের চুক্তি ছিল কারখানাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষের। বিষয়টি ঘিরে তদন্ত জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মারিয়া