ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে বর্ষায়

বৃষ্টির ফাঁকে ঝকঝকে নীল আকাশ, মিষ্টি চাঁদের আলো

মোরসালিন মিজান 

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ৫ জুলাই ২০২৩

বৃষ্টির ফাঁকে ঝকঝকে নীল আকাশ, মিষ্টি চাঁদের আলো

নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। দেখে শরতের কথা মনে পড়ে যায়। বুধবার রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকা থেকে তোলা

বর্ষার মূল বৈশিষ্ট্য যে বৃষ্টি, সে তো বলাই বাহুল্য। আষাঢ় শ্রাবণ দুই মাস তুমুল বৃষ্টি হয়। দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ডও হয় এ সময়। রিমঝিম বৃষ্টি, বারিধারা ভীষণ পছন্দ করে বাঙালি। তবে টানা বর্ষণ অনেক সময় জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলে। প্রায়শই দিনের বেলায় আলো দেখা যায় না। সূর্য  কোথায় যেন ডুব দেয়। মুখ গুমড়া করে রাখে আকাশ। ঋতুটিকে তখন একঘেয়ে মনে হয়। এবার কি হবে? কি দাঁড়াবে বর্ষার বৈশিষ্ট্য? এ উত্তর হয়তো আরও পরে জানা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত বেশ উপভোগ্য মনে হচ্ছে বর্ষাকে। 
আষাঢ়ের সূচনাতেই কাক্সিক্ষত বৃষ্টির দেখা মিলেছে রাজধানী ঢাকায়। এর পর থেকে কম বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। কোরবানি ঈদের কয়েক দিন অবশ্য হিসাব নিকাশ অনেক পাল্টে গিয়েছিল। উৎসবের মধ্যেই হয়েছে ভারি এবং বিরতিহীন বর্ষণ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিন দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত  রেকর্ড করা হয়। একই দিন বিকেল ৪টার পর ১২ থেকে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় রাজধানীতে।
এ অবস্থার পরিবর্তনও এসেছে সহসাই। টানা বর্ষণের পর বিরতি দিয়েছে বৃষ্টি। শুধু কি তাই? গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার আকাশ মোটামুটি ঝকঝকে দেখাচ্ছে। প্রখর রোদ নিয়ে হাজির হয়েছে সূর্য। সোম মঙ্গল ও বুধবার ঢাকার আকাশ বেশিরভাগ সময় ছিল আলোঝলমলে। তার চেয়ে বড় কথা, এ সময় নীল আকাশের দেখা মিলেছে। হালকা নীল অকাশে উড়েছে সাদা মেঘের ভেলা। হ্যাঁ, বর্ষার আকাশে শরতের রূপ। অনেকে তাই চলতি পথে হঠাৎ থেমেছেন। বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়েছেন আকাশপানে। বাসা বাড়ির ছাদ বা বারান্দা থেকে অপরূপ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতেও দেখা গেছে। 
তবে এ তো আর শরত নয়। নতুন ঋতুর আরও ঢের বাকি। তাই সাময়িক পরিবর্তনকে বর্ষার বৈচিত্র্য হিসেবেই গ্রহণ করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। তারা বলছেন, বর্ষার বদান্যতায় শরত হয়তো অনেক আগেভাগে তার আগমনী ঘোষণা করার সুযোগ পেয়ে গেল। আমরাও কিছুটা আন্দোলিত হলাম।  
এদিকে, দিনের মতো বর্ষারাতও বেশ মায়াবী হয়ে উঠেছে। লক্ষ্য করেছেন কি? ক’দিন ধরেই আকাশে পূর্ণচাঁদ! কখনো সখনো মেঘের আড়ালে চলে যাচ্ছে। আবার বেরও হয়ে আসছে প্রতিযোগিতা করে। মস্তবড় চাঁদের ¯িœগ্ধ আলোতে ভেসে যাচ্ছে রাজধানী। আষাঢ়ী পূর্ণিমার প্রভাবেই এমন স্নিগ্ধ রাত। 
বর্ষার বাকি রাত বা দিনগুলো, অনুমান করা যায়, একই রকম যাবে না। না যাক। বর্তমানটাকে উপভোগ্য করে তোলা দিন রাতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যেতে পারে অনায়াসেই।

×