ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

আকর্ষণীয় অফার দিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো

ঈদে আকাশপথে ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে

আজাদ সুলায়মান

প্রকাশিত: ০০:১৪, ২ এপ্রিল ২০২৩

ঈদে আকাশপথে ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে

পবিত্র ঈদুল ফিতরের এখনো বিশ দিন বাকি থাকলেও আকাশপথের টিকিট কাটা নিয়ে চলছে তোড়জোড়

পবিত্র ঈদুল ফিতরের এখনো বিশ দিন বাকি থাকলেও আকাশপথের টিকিট কাটা নিয়ে চলছে তোড়জোড়। এরই মধ্যে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর অর্ধেক বুকিং শেষের পথে। এবারও ঈদের চাপ সামাল দিতে বাড়ানো হয়েছে টিকিটের দাম। আগামী সপ্তাহের মধ্যে দেশের বিভিন্ন রুটে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট বুকিং শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। বেসরকারি ইউএস বাংলা, নভো এয়ার ও এয়ারএস্ট্রার টিকিটেরও দাম বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা-সৈয়দপুরের ভাড়া যেখানে ছিল চার হাজার টাকা সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে আট হাজারেরও বেশি। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এটা আরও বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন এয়ারলাইন্স কর্তারা। তবে বিমান এবারও আগের মতোই টিকিটের দাম সহনশীল রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে। যে কারণে এখন বিমানের প্রতিই যাত্রীদের ঝোক বেশি। 
ট্রাভেলস এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, এটা প্রতি বছরের  চিত্র। ঈদের সময় শুধু আকাশপথ নয়, সব পথেরই টিকিটের দাম বেড়ে যায়। যদিও  দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং মানুষের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে অন্য বছরের তুলনায় এবার চিত্রটা ভিন্ন হতে পারে। প্রতি বছর ঈদকে কেন্দ্র করে সড়ক ও নৌপথের পাশাপাশি আকাশপথে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড বাড়ে। বেশিরভাগ মানুষ বিশেষ করে উত্তরের পথে আট ঘণ্টার পথ ৪০ ঘণ্টায়ও পৌঁছানো অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

ফলে কয়েক বছর ধরে আকাশপথে গ্রামে ছুটে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অন্য বছরগুলোতে রমজান শুরুর প্রথম সপ্তাহেই টিকিট বুকিং শেষ হয়ে যায়। তবে এবার অর্ধেক বুকিং হয়েছে। রমজান উপলক্ষে দেশের সব অভ্যন্তরীণ রুটে এখন যাত্রীদের চাপ কম রয়েছে। শবে কদরের পর তা বাড়বে।  টিকিটের দামও বাড়বে তখন। 
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা, এয়ার অ্যাস্ট্রা ও নভোএয়ার যাত্রী আকর্ষণে অফার ঘোষণা করেছে। পুরো বছর যেখানে আকাশপথে  যেতে গুনতে হয়েছে তিন হাজারের বেশি, তা এখন কোনো কোনো রুটে ঝড়ো অফারে নেমে এসেছে মাত্র দুই হাজার ২০০ টাকাতে। ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ টিকিট বুকিং শেষ হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি সপ্তাহে বাকিগুলোও বুকিং হয়ে যাবে।

ইউএস-বাংলা সব রুটে রমজান উপলক্ষে ৫০০ টাকা করে ছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে এয়ার অ্যাস্ট্রার জনসংযোগ কর্মকর্তা সাকিব হাসান শুভ বলেন, আমাদেরও টিকিট মোটামুটি বুকিং শেষের পথে।  কোনো রুটে শতভাগ আবার কোনো রুটে অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে। আগামী কয়েক দিনে ফুল বুকিং হবে বলে আশা করছি। এয়ার অ্যাস্ট্রা নতুন বেসরকারি এয়ারলাইন্স হিসেবে দেশের মানুষের মাঝে অল্প দিনে আস্থা অর্জন করে নিয়েছে। বুকিংয়ের পাশাপাশি মাহে রমজান উপলক্ষে এয়ার অ্যাস্ট্রা সকল রুটে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে।

এয়ারলাইন্সটি এখন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন চারবার ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এই দুই রুটের ভাড়া নির্ধারণ করেছে দুই হাজার ৯৯৯ টাকা এবং চার হাজার ২৯৯ টাকা। অন্যদিকে সিলেট রুটে দিনে দুটি ফ্লাইট চলছে। এই রুটের ভাড়া এখন দুই হাজার ৯৯৯ টাকা। তবে এই অফার চলবে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত অন্যদিকে এয়ার অ্যাস্ট্রার মতোই মাহে রমজান উপলক্ষে বিশেষ অফার দিচ্ছে নভোএয়ার। বেসরকারি এই এয়ারলাইন্সটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, সৈয়দপুর ও রাজশাহী রুটে দুই হাজার ৯৯৯ টাকায় যাত্রী পরিবহনের অফার দিয়েছে।

এই অফার ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এ ছাড়াও ঢাকা টু কক্সবাজার রুটে চার হাজার ২৯৯ টাকায় যাত্রী পরিবহনের অফার দেওয়া হয়েছে। অফার চলবে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। আগামী ১৮ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল ও রাজশাহী টু ঢাকা রুটে দুই হাজার ৫০০ টাকায় টিকিট কেনার অফার দিয়েছে নভোএয়ার।
নভোএয়ারের জনসংযোগ কর্মকর্তা নিলাদ্রী মহারতœ জানান। ঈদে এমনিতেই টিকিটের চাহিদা বাড়ে। সে জন্য এবারও  বুকিং প্রায় শেষের পথে। তবে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে।

এ সম্পর্কে জানতে  চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) সালাহ উদ্দিন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা এবার সৈয়দপুর, রাজশাহী ও যশোর রুটে অতিরিক্ত ১৪টি ফ্লাইট চালানোর সিদ্বান্ত নিয়েছি। যাতে কম টাকায় যাতে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা যায়, সে জন্য অতিরিক্ত ফ্লাইট চালানো হবে। বিমানের ভাড়া এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিকই আছে। যেমন অনান্য এয়ারলাইন্সে ঢাকা-সৈয়দপুরের ভাড়া যেখানে ৮/৯ হাজার বিমান সেখানেই চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় টিকিট দিচেছ। ঈদ ঘনিয়ে আসার সময় হয়তো এ ভাড়া কিছুটা বাড়তে পারে। 
সালাহ উদ্দিন বলেন, যাত্রীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আমরা ঈদের সময় বাড়তি ভাড়া আদায়ের কৌশল নেই না। এবারও আমরা সাধ্যমতো কম ভাড়া আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

×