
জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ হিরোশিমা দিবসের ৭৫তম বার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও হিরোশিমা দিবস পালিত হবে। এই ভয়াবহ বোমা হামলার সাত দশক পার হয়ে গেলেও ভয়াল সেই দিনের কথা এখনও ভোলেনি জাপানসহ সারাবিশ্বের মানুষ। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিপ্রিয় মানুষ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে। খবর ওয়েবসাইটের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জাপানের হিরোশিমা শহরে ১৯৪৫ সালের এদিন সকালে বিমান থেকে ‘লিটল বয়’ নামের প্রথম পারমাণবিক বোমাটি নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর দৈর্ঘ্য ছিল ১০ ফুট ৬ ইঞ্চি , ব্যাস ২৯ ইঞ্চি ও ওজন ৯৭০০ পাউন্ড। ৭৫ বছর আগে এই দিনে পরমাণুশক্তি প্রথম মানুষ মারার কাজে ব্যবহৃত হয়। সেই প্রথম, সেই শেষ। প্রথম জাপানের হিরোশিমা শহরে। তিন দিন পরে ৯ অগস্ট একই ঘটনা আরও এক জনপদ নাগাসাকিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তিমলগ্নে ৬ আগস্ট মার্কিন বাহিনী জাপানের হিরোশিমায় এবং ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা চালিয়ে বিপুল সংখ্যক নিরীহ, ঘুমন্ত অসহায় শিশু-নারী-পুরুষ এবং বেসামরিক মানুষ হত্যা করে। একটি বি-২৯ বিমান থেকে বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়। মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্নেল পল ডব্লিউ টিবেটস বিমানটি চালিয়েছিলেন। টিবেটস বোমা হামলার আগের রাতে তার মায়ের নামে বিমানটির নাম দেন ‘নোলা গেদ’। ভয়াবহ বিধ্বংসী এ বোমার আঘাতে নিহত ও দীর্ঘমেয়াদে অসুস্থ হয় লাখো সাধারণ মানুষ। এজন্য তাদের এবং এই বোমার ভয়াবহতাকে স্মরণ করা হয় দিনটিতে। পরপর দুটি বোমা বিস্ফোরণে শহর দুটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। বোমা বিস্ফোরণের পর হিরোশিমায় তাৎক্ষণিকভাবে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়। ১৯৪৫ সালের শেষ নাগাদ দুই শহরের প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। এছাড়াও বোমার তেজস্ক্রিয়তায় এখনও সেখানকার অনেক মানুষ ক্যান্সার, জন্মগত ত্রুটিসহ নানা ধরনের জটিল সমস্যায় ভুগছেন। এর আগে ইতিহাসের দুই ব্যাখ্যা ঘিরে জোর বিতর্ক দেখা গিয়েছিল হিরোশিমার ৫০ বছরে। যখন ওয়াশিংটনের এয়ার এ্যান্ড স্পেস মিউজিয়াম এক বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। যে বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছিল হিরোশিমায় তা জনগণকে দেখান হবে। সঙ্গে লেখা হবে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরুর কথা। তবে এতে প্রবল আপত্তি উঠেছিল সাবেক মার্কিন সেনা অফিসারদের। তাদের দাবি, হিরোশিমা-নাগাসাকি না হলে যুদ্ধ অনেকদিন গড়াত এবং আরও অনেক প্রাণহানি হতো।