ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাহিত্যাঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র রেজাউর রহমান আর নেই

আবু সালেহ মোঃ হামিদুল্লাহ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৩:২১, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৩:২৭, ১০ জুন ২০২৫

সাহিত্যাঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র রেজাউর রহমান আর নেই

ছবি: জনকণ্ঠ

কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি মুহম্মদ রেজাউর রহমান (১৯৫৫–২০২৫) ৯ই জুন সোমবার বিকাল ৫:৩০-এ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সজ্জন, বন্ধু-বাস্তব, সদালাপী ও একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক। শহরের গৌরাঙ্গবাজারের সুপ্রসিদ্ধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী ‘শাহজাদি জর্দাঘর’-এর স্বত্বাধিকারী ছিলেন তিনি।

মুহম্মদ রেজাউর রহমান ১১ জানুয়ারি ১৯৫৫ সালে করিমগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সাবেক সেনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুর রহমান এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী মমতাজ বেগম, এক ছেলে জাইসী মোহাম্মদ নাভীদ (নরওয়ের অভিবাসী), এক মেয়ে সারওয়াত নুয়েরী এবং তাঁর ৪ ভাই ও ৩ বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি ১৯৭৩ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘সুধাকর’ নামক সাহিত্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণে ‘রক্তের স্বরলিপি’ সংকলন প্রকাশের মাধ্যমে সাহিত্যজগতে আবির্ভূত হন। ছাত্রজীবনেই মফস্বল সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করে একসময় তিনি জাতীয় দৈনিক ‘সংগ্রাম’ পত্রিকার স্টাফ হয়ে দীর্ঘ কয়েক যুগ ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছেন।

তিনি সাপ্তাহিক বাংলার দর্পণ, দৈনিক জাহান, সাহিত্য মাসিক চন্দ্রাকাশ, অঙ্গীকার ডাইজেস্ট, সাপ্তাহিক মাটির বাংলা ও ইসতিকলাল, সাহিত্য পত্রিকা উত্তরকাল সম্পাদনা করেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য পাতায় এবং সংকলনে তাঁর লেখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

তিনি কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠালগ্ন (১৯৮৪) থেকে এর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ২০০৩ থেকে ২০১০ পর্যন্ত একটানা ৭ বছর তিনি পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের প্রকাশিত সংকলনগুলোতেও তাঁর বেশ কয়েকটি লেখা ছাপা হয়। তিনি পরিষদের সাহিত্যসভা ও সাহিত্যসম্মেলনগুলোতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন কিশোরগঞ্জের সাহিত্যাঙ্গনে অভিভাবকতুল্য।

মঙ্গলবার (১০ই জুন) বাদ জোহর ঐতিহ্যবাহী শহীদী মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

তাঁর এই মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে কিশোরগঞ্জ হারালো একজন গুণী ব্যক্তিত্ব ও একজন অভিভাবক।

মুমু ২

×