
ক্যালিফোর্নিয়ায় গভর্নরের অনুমতি ছাড়াই জাতীয় রক্ষী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে বিতর্কে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি এই সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়িয়ে সাফ জানিয়েছেন সময়ের দাবিতে এবার আর নিয়ম মেনে চলার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি আগেও এমন পরিস্থিতি দেখেছি। তখন প্রতিটি নিয়ম মেনে গভর্নরদের অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তারা জাতীয় রক্ষী পাঠাতে রাজি হয়নি।”
তার কথায়, “আমি তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম, এমন কিছু আবার হলে আমাদের আরও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ ওরা (গভর্নররা) আসলে কিছু করতে চায় না।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য তার এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগ, লস অ্যাঞ্জেলেসে কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভ দমনে ট্রাম্প বেআইনিভাবে ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ডকে ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে এনে মোতায়েন করেছেন। এই পদক্ষেপে রাজ্যের ক্ষমতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ হয়েছে বলেই মামলায় দাবি করা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা জানিয়েছেন, “তখন কোনো বিদ্রোহের ঝুঁকি ছিল না, ছিল না বিদেশি আগ্রাসনের আশঙ্কাও। ফেডারেল আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার কোনো কারণও ছিল না। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প সেনা পাঠিয়েছেন।”
প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে অবশ্য ভিন্ন ব্যাখ্যা এসেছে। তাদের যুক্তি, ফেডারেল আইনে এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট চাইলেই সেনা মোতায়েন করতে পারেন যদি মনে করেন, দেশ ‘বিদ্রোহ’, ‘বিদেশি হুমকি’ কিংবা আইনের শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় বাধার মুখে পড়েছে।
ট্রাম্প নিজের অবস্থানে অনড় থেকে বলেন, “লস অ্যাঞ্জেলেসে পুলিশ কিছুই করতে পারছিল না। শহরটা যেন বন্দিদশায় ছিল। আমরা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো।”
যদিও বিক্ষোভগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছিল শান্তিপূর্ণ, কিছু ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তারপরও পুরো শহরকে ‘অবরুদ্ধ’ বলে বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প।
তিনি আরও বলেন, “লস অ্যাঞ্জেলেসে কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই অলিম্পিক হবে। আমরা চাই না, কেউ এই শহরকে বিপর্যস্ত বা অস্থির জায়গা হিসেবে দেখুক।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিয়ম ভেঙে হলেও, তার মতে পরিস্থিতি সামলাতে এমনটাই জরুরি ছিল। তবে বিশ্লেষকদের মতে, কেবল আইনশৃঙ্খলার নামে এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে রাজ্য-ফেডারেল সম্পর্কের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি তাই আরও একবার এক অস্বস্তিকর উত্তেজনার মুখে দাঁড়িয়ে।
সূত্র:https://tinyurl.com/r4adetat
আফরোজা