
ছবি: সংগৃহীত
চেহারার ব্রণ যেন কিছুতেই কমছে না? শুষ্কতা আর হঠাৎ হঠাৎ দেখা দেওয়া ফুসকুড়িও নিত্য সমস্যা? চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মধুর্য গগিনেনি জানালেন, জটিল নয় বরং সহজ এবং কার্যকর স্কিনকেয়ার রুটিনই হতে পারে সমাধান।
হায়দরাবাদের জেনারা ক্লিনিকস-এর চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মধুর্য সম্প্রতি এইচটি লাইফস্টাইল-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ব্রণ সারাতে ও ত্বককে দীর্ঘমেয়াদে পরিষ্কার রাখতে প্রমাণিত কিছু উপাদান ব্যবহার করে খুব সাধারণ কিছু ধাপে রুটিন মেনে চললেই ফল পাওয়া যায়।”
ব্রণে বন্ধু স্কিনকেয়ার রুটিন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ: ক্লিনজিং
ডা. মধুর্য বলেন, “প্রতিদিন সকাল ও রাতে দুইবার মুখ ধোয়ার জন্য মাইল্ড, নন-কমেডোজেনিক (অর্থাৎ ব্রণ সৃষ্টি না করে এমন) ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যারিয়ার নষ্ট না করেই ময়লা, তেল ও মেকআপ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।”
তিনি জানান, অনেকেই ভুল করে জোরে ঘষে বা অতিরিক্ত ধোয়ায় ব্রণ আরও বাড়িয়ে ফেলেন—এটা না করাই ভালো।
যেসব উপাদান কার্যকর
চিকিৎসা ও স্কিনকেয়ার পণ্যে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে রয়েছে:
বেঞ্জয়েল পারঅক্সাইড: ব্রণ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে ও প্রদাহ কমায়।
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড: লোমকূপের ভেতরের তেল ও মৃত কোষ দূর করে।
অ্যাডাপালিন: রেটিনয়েড জাতীয় ক্রিম, যা কোষের কার্যক্রম বাড়ায় এবং নতুন ব্রণ হওয়া রোধ করে।
ক্লিনডামাইসিন: প্রদাহ কমায় ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে।
ডা. মধুর্য জানান, এই উপাদানগুলো স্কিনকেয়ার রুটিনের পাশাপাশি ক্লিনিকে চিকিৎসার অংশ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়—ব্রণের মাত্রা ও ধরন অনুযায়ী।
ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন অপরিহার্য
ব্রণ থাকলেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যাবে না—এই ভুল ধারণা ভেঙে দিয়ে ডা. মধুর্য বলেন, “অয়েল-ফ্রি ও হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের সুরক্ষা ব্যারিয়ার বজায় থাকে এবং ব্রণের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়।”
তাঁর মতে, “ভালো ময়েশ্চারাইজার ত্বক দ্রুত ভালো করতে সাহায্য করে এবং ওষুধ সহ্য করার ক্ষমতাও বাড়ায়।”
অপরদিকে, সানস্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, “বিশেষ করে রেটিনয়েড বা অ্যাসিড ব্যবহার করলে সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং দাগ-ছোপ পড়ার ঝুঁকি কমে।”
তাঁর পরামর্শ: কমপক্ষে SPF ৫০-এর ব্রড-স্পেকট্রাম ও নন-কমেডোজেনিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ধৈর্য ও নিয়মিত রুটিনই মূল চাবিকাঠি
ডা. মধুর্য বলেন, “ব্রণের চিকিৎসায় দ্রুত ফল আশা করা ঠিক নয়। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ পর থেকে পরিবর্তন ধরা পড়ে। তাড়াহুড়া করে পণ্য বদলানো, বা ব্রণ খুঁচিয়ে তোলার অভ্যাস—দুইই চিকিৎসার ক্ষতি করে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় লাইফস্টাইল পরিবর্তন, যেমন পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস কমানো ও স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়াও চিকিৎসার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
“সঠিক পণ্য সঠিকভাবে ব্যবহার করাই স্কিনকেয়ার রুটিনের মূল কথা,” বলেন ডা. মধুর্য। “ত্বকের স্বাভাবিক সুস্থতা বজায় রেখেই ধীরে ধীরে ব্রণ সারানোর দিকেই আমাদের নজর থাকে।”
দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি কেবল তথ্যগত উদ্দেশ্যে তৈরি। কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হলে অবশ্যই যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
রাকিব