
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হল কোলন ক্যান্সার। এই রোগটি প্রাথমিকভাবে কোনো লক্ষণ ছাড়াই শরীরে বাড়তে থাকে, ফলে রোগ শনাক্তকরণ বিলম্বিত হয়। তবে সময়মতো কিছু সতর্কতা নিলে এই রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। চিকিৎসকরা বলছেন, কোলন ক্যান্সারের কয়েকটি লক্ষণ শুরুতেই ধরতে পারলে রোগ প্রতিরোধ বা দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব হয়। নিচে এমনই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ তুলে ধরা হলো, যা কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।
কোলন ক্যান্সার কী?
কোলন ক্যান্সার হল বৃহৎ অন্ত্রের (large intestine) একটি অংশ কোলনে কোষ বৃদ্ধির অনিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া। এটি কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের (colon ও rectum– উভয় অংশের ক্যান্সার) মধ্যে পড়ে। বয়স, পারিবারিক ইতিহাস, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং জীবনযাপন পদ্ধতি এর ঝুঁকি বাড়ায়।
অবহেলা করা যাবে না এমন ৫টি লক্ষণ:
১. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন
দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা মলের প্রবণতা থাকলে তা হতে পারে কোলনে কোনো বাধার ইঙ্গিত। একাধিক সপ্তাহ এই উপসর্গ চলতে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২. মলে রক্ত দেখা
মলে উজ্জ্বল লাল বা কালচে রঙের রক্ত থাকা মানে শরীরের কোথাও রক্তপাত হচ্ছে। যদিও পাইলসের মতো সাধারণ রোগেও এমন হতে পারে, তবু রক্ত বারবার দেখা দিলে অবিলম্বে পরীক্ষা করাতে হবে।
৩. পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প
পেটের নীচের অংশে স্থায়ী ব্যথা, ফাঁপা ভাব বা ক্র্যাম্প কোলনে টিউমার থাকার ইঙ্গিত হতে পারে। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের সঙ্গে এই উপসর্গ মিল থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৪. অযাচিত ওজন কমে যাওয়া
ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন হঠাৎ কমে যাওয়া ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। শরীরে ক্যান্সার কোষের প্রভাবে বিপাকক্রিয়া (metabolism) বদলে যায়। যদি অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গেও ওজন কমে যায়, তা হলে তা আরো উদ্বেগজনক।
৫. অতিরিক্ত ক্লান্তি
সব সময় দুর্বলতা অনুভব করা, বিশ্রামের পরেও স্বস্তি না পাওয়া— এগুলো রক্তাল্পতার (anemia) লক্ষণ হতে পারে। কোলন ক্যান্সার শরীরের ভিতরে রক্তপাত ঘটায়, যার ফলে ক্লান্তি আসে। তাই ব্যাখ্যাতীত দুর্বলতা থাকলে দেরি না করে পরীক্ষা করানো জরুরি।
ঝুঁকি কমাতে যেসব অভ্যাস গড়ে তুলবেন:
প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখুন আঁশযুক্ত খাবার, শাকসবজি ও ফল।
প্রসেসড ও অতিরিক্ত লবণ-চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন: হটডগ, সসেজ) খাওয়া কমান।
প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকুন।
স্বাস্থ্যবান পেট মানেই স্বাস্থ্যবান জীবন
সুস্থ হজমশক্তি বজায় রাখতে আজ থেকেই গাট-ফ্রেন্ডলি খাবার খান, নিয়মিত চলাফেরা করুন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
উপসর্গ দেখলেই দেরি নয়
উপরের যেকোনো লক্ষণ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা একাধিক উপসর্গ একসঙ্গে দেখা দেয়, দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া
নোভা