ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

মধ্যবিত্তরা বারবার যে ৫টি অর্থনৈতিক ফাঁদে পা দেন, যা তাদের ধনী হতে দেয় না!

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ২৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:০৮, ২৮ জুন ২০২৫

মধ্যবিত্তরা বারবার যে ৫টি অর্থনৈতিক ফাঁদে পা দেন, যা তাদের ধনী হতে দেয় না!

অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল জীবনযাপন করেও অনেক মধ্যবিত্ত কেন বছরের পর বছর একই জায়গায় আটকে থাকেন এ প্রশ্ন কি আপনার মনে কখনো এসেছে?বাড়ির কিস্তি সময়মতো দিচ্ছেন, গাড়িটাও নেহাত মন্দ নয়, চাকরিও বেশ ভালো। কিন্তু এরপরও কেন যেন অর্থসম্পদ গড়ে ওঠে না। এর পেছনে কিছু সূক্ষ্ম কিন্তু মারাত্মক আর্থিক ফাঁদ রয়েছে, যা মধ্যবিত্তদের ধনীর কাতারে উঠে আসার পথ রুদ্ধ করে দেয়।

চলুন, দেখে নিই এমনই পাঁচটি অর্থনৈতিক ফাঁদ, যেগুলো সচেতন না থাকলে আপনার স্বপ্নের ভবিষ্যৎও গুঁড়িয়ে যেতে পারে।

১. দেখনদারি জীবন, ভিতরে ফাঁকা জমানো

অনেকে বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইফস্টাইলও বাড়িয়ে ফেলেন। নতুন গাড়ি, বড় বাসা, দামি গ্যাজেট সবই যেন নতুন আয়ের প্রতীক। এটা বেশ আনন্দেরও বটে, কিন্তু একে বলা হয় “লাইফস্টাইল ইনফ্লেশন” বা “অপচয় প্রবণতা”।প্রতিবার আয়ের সঙ্গে খরচ বাড়ালে প্রকৃত সম্পদ গঠনের সুযোগটাই হারিয়ে যায়। মাসশেষে হাতে কিছুই থাকে না, বরং বেড়ে যায় বিলের চাপ।
জীবন উপভোগ করবেন, কিন্তু তার বিনিময়ে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার সুযোগ ছাড়বেন না।

২. একমাত্র আয়ের ওপর নির্ভরতা

একটা চাকরি মানেই নিশ্চয়তা এই ধারণা আমাদের অনেকের ভেতরে গেঁথে গেছে। কিন্তু একটি মাত্র আয়ের ওপর নির্ভর করলে সামান্য ঝাঁকিতেই জীবন স্থবির হয়ে যেতে পারে।যারা সত্যিকার অর্থে ধনী হয়েছেন, তাদের বেশিরভাগেরই একাধিক আয় রয়েছে ব্যবসা, শেয়ারবাজার, রিয়েল এস্টেট কিংবা অনলাইন ইনকাম।
একটা সাইড ইনকাম শুরুতে খুব বেশি আয় না দিলেও সময়ের সঙ্গে তা বড় আকার নিতে পারে।

৩. বিনিয়োগে ভীতিপ্রবণতা

অনেক মধ্যবিত্তই বিনিয়োগকে ভয় পান। অনিশ্চয়তা, লোকসান বা বাজার ওঠানামার ভয় তাদের একদমই হাত গুটিয়ে বসতে বাধ্য করে।এই ভয়েই অনেক সময় অর্থ থাকে শুধু সঞ্চয় হিসাব বা অতি রক্ষণশীল পেনশন স্কিমে, যেখানে মুদ্রাস্ফীতিই ধীরে ধীরে তার মান কমিয়ে দেয়।বিনিয়োগ শেখার সময়ই হলো এখন, না হলে “সঠিক সময়” কোনোদিন আসবেই না।

৪. ভোক্তা ঋণের বোঝা

ক্রেডিট কার্ডে একবার বকেয়া শুরু হলে সেটা হঠাতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। উচ্চ সুদের এই ঋণ দীর্ঘ মেয়াদে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সামর্থ্য কেড়ে নেয়।পাঠ এখানেই ঋণ নিন, তবে সেটা হোক প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাসম্পন্ন কিছুতে, আর ফেরতের পরিকল্পনাটা থাকুক একদম পরিষ্কার।

৫. দক্ষতা না বাড়ানো, থেমে থাকা এক জায়গায়

ডিজিটাল যুগে প্রতিনিয়ত সবকিছু বদলাচ্ছে, কিন্তু অনেকেই এক দশক আগের স্কিল নিয়েই থেমে আছেন।

যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, কোডিং, ডেটা অ্যানালিটিক্স শেখার মাধ্যমে অনেকেই আয় বাড়িয়ে নিচ্ছেন।
আজকাল অনলাইন কোর্স, ফ্রি টিউটোরিয়াল, কমিউনিটি ক্লাস এসবের সুযোগ নিয়েই আপনি সহজে দক্ষতা বাড়াতে পারেন।

ক্যারিয়ার থেমে থাকবে, যদি আপনি নিজেকে নতুন করে গড়ার মানসিকতা না রাখেন।

শেষ কথা

এই পাঁচটি ফাঁদ হয়তো খুব সাধারণ মনে হতে পারে, কিন্তু এদের মিলিত প্রভাবই মধ্যবিত্তদের ধনীর কাতারে যেতে বাধা দেয়।ধনবান হওয়া মানে শুধু বড় ইনকাম না, বরং বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া জীবনের কিছু মানে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা।
হতে পারে সেটা নতুন গাড়ি না কিনে ছোট একটা ব্যবসায় বিনিয়োগ, কিংবা রাতে অফিস থেকে ফিরে একঘণ্টা কোডিং শেখা বা হতে পারে একজন আর্থিক পরামর্শকের কাছে গিয়ে বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করা।

বুঝে রাখুন, প্রকৃত সম্পদ গঠন হয় প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তের ওপর। আর সেই সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয় সাহস, ধৈর্য আর পুরোনো অভ্যাসকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মানসিকতা দিয়ে।

 

 


সূত্র:https://tinyurl.com/4tnk3dv7

আফরোজা

×