
ছবি: প্রতীকী
দাম্পত্য বা প্রেমের সম্পর্কে মতবিরোধ হতেই পারে। কিন্তু রাগের মাথায় বলা কিছু কথাই সম্পর্কের ভিত নড়বড়ে করে দিতে পারে—বিশেষ করে যখন সেগুলো প্রিয়জনের আবেগকে উপেক্ষা বা অবমূল্যায়ন করে। মার্কিন মনোবিদ ড. জেফ্রি বার্নস্টাইন সম্প্রতি এমনই তিনটি ‘বিষাক্ত’ বাক্য চিহ্নিত করেছেন, যেগুলো কখনোই সঙ্গীকে বলা উচিত নয়।
যে তিনটি কথা সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে:
১. ‘তুমি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছ’
২. ‘এটা কোনো বড় ব্যাপার না’
৩. ‘তুমি খুব বেশি সংবেদনশীল’
ড. বার্নস্টাইন বলেন, ‘অনেক সময় ঝগড়ার সময় পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে গিয়েও মানুষ এসব কথা বলে ফেলেন। কিন্তু এতে বরং উল্টো প্রতিক্রিয়া হয়। এই ধরনের মন্তব্য প্রিয়জনের আবেগকে ছোট করে দেখায়, তাদের বিচার করা হচ্ছে—এমন অনুভব করায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্পর্কের শুরুর দিকে আমরা একে অপরের প্রতি খুব যত্নবান থাকি। কিন্তু সময় গড়ালে অনেকেই সাবধানতা হারিয়ে ফেলেন, এবং এমন আচরণ করেন যা একসময় ভালোবাসার জায়গা নষ্ট করে দেয়।’ তার মতে, এই কথাগুলো যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, তাহলে যেকোনো সম্পর্ক ভেঙে পড়তে বাধ্য।
একটি দাম্পত্য উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “কয়েক বছর আগে লিসা নামে এক নারী তার স্বামী অ্যারনের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসেন। তিনি বলছিলেন, ‘শুরুর দিকে অ্যারন আমাকে বলত সে আমার জন্য পাগল, কিন্তু এখন সে শুধু আমাকে পাগল বলেই ব্যঙ্গ করে, যখন আমি আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে চাই।’”
কয়েক মাসের মধ্যেই সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়।
আর কী কী অভ্যাস ক্ষতি করে সম্পর্কের?
কে কতবার দুঃখ প্রকাশ করল, কে প্রথম ঘনিষ্ঠতা শুরু করল—এই হিসাব-নিকাশ: এটি সম্পর্কে ক্ষমতার লড়াই এবং ক্ষোভ তৈরি করে।
‘স্টোনওয়ালিং’ বা নীরবতা অবলম্বন: কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হলে যদি আপনি কথা না বলেন, কিংবা একেবারে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন, তাহলে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়।
মনোবিদের পরামর্শ:
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে পারস্পরিক অনুভূতির প্রতি সম্মান থাকা জরুরি। সংবেদনশীলতা, সহানুভূতি এবং খোলামেলা আলাপ—এই তিনে ভর করেই ভালোবাসা টিকে থাকে। এমন বিষাক্ত বাক্যগুলো এড়িয়ে চললে এবং সম্পর্ককে যত্ন দিয়ে লালন করলে ভবিষ্যৎ অনেক বেশি সুন্দর হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মনোবিদ ড. মার্ক ট্র্যাভার্সও সম্প্রতি একটি ‘মারাত্মক’ কথা নিয়ে সতর্ক করেছেন। তার মতে, সঙ্গীকে বলা সবচেয়ে বিষাক্ত একটি বাক্য হলো—‘তুমি অমুকের মতো কেন হতে পারো না?’
হোক সেটা প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধুবান্ধব, মা-বাবা কিংবা অতীতের আপনি নিজেই—এই তুলনা সম্পর্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ড. ট্র্যাভার্স এই প্রবণতাকে বলেন ‘মৃত্যু-স্বরূপ তুলনা’ (death-by-comparison)। কারণ, এটি সম্পর্কের অবনতি ও ভাঙনের ইঙ্গিত বহন করে।
সূত্র: ডেইলি মেইল।
রাকিব