
ছবি: প্রতীকী
অনেকেই টয়লেটে বসে মোবাইল ঘাঁটতে পছন্দ করেন। মোবাইলে চলতে থাকে খবর পড়া, সোশ্যাল মিডিয়া দেখা কিংবা গেম খেলার মতো কাজ। তবে এই সাধারণ অভ্যাসটি আপনার মোবাইলকে ব্যাকটেরিয়ার আখড়ায় পরিণত করতে পারে—এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এক চিকিৎসাবিজ্ঞানী।
ইউনিভার্সিটি অফ লেস্টারের ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক ড. প্রিমরোজ ফ্রিস্টোন বলেন, টয়লেটে মোবাইল নেওয়া মানেই সেটিকে বিষাক্ত জীবাণুর সংস্পর্শে নিয়ে যাওয়া। তার ভাষ্য অনুযায়ী, টয়লেটের আশেপাশে থাকা বাতাসে থাকা ফিকাল ব্যাকটেরিয়া—যেমন ই.কোলাই ও স্যুডোমোনাস—সহজেই মোবাইলে লেগে যেতে পারে। ই.কোলাই ডায়রিয়া ও পেট ব্যথার জন্য দায়ী, আর স্যুডোমোনাস রক্ত ও ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
ধুয়ে নেওয়া হাতও নিরাপদ নয়!
টয়লেট থেকে বেরিয়ে হাত ধোওয়ার পর যদি আপনি আবার মোবাইল ধরেন, তবে হাত আবারও ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। ফলে, টয়লেটে মোবাইল নেওয়াই উচিত নয়। যদি নিতেই হয়, তাহলে অবশ্যই মোবাইলটি নিয়মিত স্যানিটাইজ করতে হবে। ‘আমি আমার ফোন সপ্তাহে অন্তত দু’বার অ্যালকোহলযুক্ত টিস্যু দিয়ে মুছে নিই’, বলেন অধ্যাপক ফ্রিস্টোন।
‘টয়লেট প্লিউম’’ বা বাতাসে ভাসা জীবাণু কণা
তিনি আরও জানান, টয়লেট ফ্লাশ দিলে চোখে দেখা না গেলেও তরল জীবাণুযুক্ত কণার ‘ঝাপটা’ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, যেটাকে বলা হয় ‘toilet plume’। কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্লাশ দেওয়ার ৮ সেকেন্ডের মধ্যে জীবাণু ৫ ফুট (১.৫ মিটার) দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে, টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ থাকলেও!
এর ফলে টয়লেটের পাশের দেয়াল, মেঝে, জানালার ধারে রাখা বই কিংবা এমনকি আপনার মোবাইলও এই জীবাণুর শিকার হতে পারে।
মোবাইল নিচে রাখা আরও বিপজ্জনক
অনেকে আবার মোবাইলটি মেঝেতে রেখে ফ্লাশ করেন, যেটি সবচেয়ে বিপজ্জনক অভ্যাস। ফ্রিস্টোন বলেন, ‘ফ্লাশের সময় টয়লেট থেকে ছুটে আসা জীবাণু মেঝেতে গিয়ে জমা হয় এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা জীবিত থাকে। তাই মেঝেতে মোবাইল রাখলে সেটি সরাসরি জীবাণুর সংস্পর্শে চলে যায়।’
কী করবেন?
- ফোন টয়লেটে না নেওয়াই শ্রেয়
- নিয়মিত স্যানিটাইজ করুন (৭০% অ্যালকোহল ওয়াইপ বা হালকা সাবান-পানি দিয়ে)
- টয়লেট ব্যবহারের পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে তারপর ফোন ধরুন
সূত্র: ডেইলি মেইল।
রাকিব