বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় যেসব ফুল ফোটে আনন্দ হয়ে

আকাশে সেজেছে মেঘেরা। আসি আসি করছে বর্ষা। বর্ষা মানেই নতুন প্রাণ, নতুন ছোঁয়া। গ্রীষ্মের খরতাপের পর প্রকৃতি যেন নিজের দেহ মন ধুয়ে-মুছে সেজে ওঠে এক অনন্য রূপে। আকাশ জুড়ে সাদা-কালো মেঘের খেলা, টিপটিপ করে নেমে আসা বৃষ্টিধারা আর পল্লীবাটির কাদামাটিতে মিশে থাকা শেকড়ের গন্ধ—সব মিলিয়ে বর্ষা আমাদের হৃদয়ে গাঁথে এক গভীর ভালোবাসার চিহ্ন। এই ঋতুর আরেক বড় সৌন্দর্য হলো বর্ষার ফুল।

বর্ষায় ফোটে এমন কিছু ফুল রয়েছে যাদের সৌন্দর্য শুধু চোখ নয়, মনকেও আচ্ছন্ন করে। আসুন একঝলকে দেখে নেওয়া যাক বর্ষার রঙিন দূতদের—

কাঞ্চন ফুল
বর্ষার শুরুর দিকে যে ফুলটি খুব বেশি নজরে পড়ে তা হলো কাঞ্চন ফুল। ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে হালকা বেগুনি বা সাদা রঙের কাঞ্চন যেন মেঘলা দিনের আশ্বাস।

জারুল ফুল
বর্ষার শুরুতেই রাস্তাঘাট, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ কিংবা পুকুরপাড়ে ফুটে ওঠে নীলচে-বেগুনি জারুল। এই ফুল শুধু সৌন্দর্য নয়, বর্ষার আগমনেরও ইঙ্গিত বহন করে।

কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া
যদিও এই দুটি গ্রীষ্মের ফুল, তবে বর্ষার শুরুতেও অনেক জায়গায় দেখা যায় তাদের রঙিন উপস্থিতি। কৃষ্ণচূড়ার আগুনরঙা আর রাধাচূড়ার হলুদে যেন প্রকৃতি আঁকে আবেগের ক্যানভাস।

মালতী ও বেলি ফুল
বর্ষায় এই ফুলগুলো তাদের সুঘ্রাণ দিয়ে মন মাতায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর বেলি ফুলের ঘ্রাণে ভরে ওঠে উঠোন, বারান্দা ও বাগান।

শিউলি ফুল
বর্ষার শেষ প্রান্তে শিউলি ফুলের আগমন ঘটে। ভোরের শিশির ভেজা শিউলি যেন বলে ওঠে—শরতের আগমনবার্তা।

কপিফুল ও দত্তুরা
পাহাড়ি অঞ্চল বা নির্জন জায়গায় ফুটে থাকা এই ফুলগুলো বর্ষার আর্দ্র আবহে যেমন টিকে থাকে, তেমনি পরিবেশে আনে রহস্যময় সৌন্দর্য।

হিজল ও করচ ফুল
নদীর ধার ঘেঁষা হিজল ও করচ গাছে বর্ষায় যে ফুল ফোটে, তা যেন জল-প্রেমিক প্রকৃতির মুখচ্ছবি।

বর্ষার প্রতিটি দিন, প্রতিটি ফুল, প্রতিটি বৃষ্টি আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়। যেন প্রকৃতি আমাদের বলে—শুধু গ্রীষ্মের তাপ নয়, জীবনে শান্তির ছোঁয়া আনতে মাঝে মাঝে দরকার এক পশলা বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টির সঙ্গে থাকা ফুলেরা আমাদের হৃদয়ে ছড়িয়ে দেয় প্রশান্তি, সৌন্দর্য ও ভালোবাসা।