
ছবি: সংগৃহীত
মাত্র এক চিমটে আয়ুর্বেদিক চূর্ণেই দূর হতে পারে মুখের শত সমস্যা। দাঁতের পোকা, মাড়ির পচন ও দুর্গন্ধের মতো সমস্যায় খরচ ছাড়াই মিলবে আরাম। নিম, লবঙ্গ, হলুদ, বেকিং সোডা ও সৈন্ধব লবণ দিয়ে তৈরি এই চূর্ণ কার্যকর এবং সাশ্রয়ী।
আপনার যদি দাঁতে পোকা ধরার সমস্যা থাকে, দাঁত ব্যথা হয় অথবা মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, তবে চিন্তার কিছু নেই। এই সমস্যাগুলোর জন্য আর হাজার হাজার টাকা খরচ করে দামী চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। রান্নাঘর, পানের দোকান এবং প্রকৃতির কাছেই রয়েছে সমাধান। কিছু সাধারণ উপাদান মিশিয়ে আপনি এমন একটি আয়ুর্বেদিক চূর্ণ তৈরি করতে পারেন, যা এই সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান দিতে পারে।
এই বিষয়ে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় নিযুক্ত আচার্য ভবনেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, মুখ ও দাঁতের বেশিরভাগ রোগের প্রতিকার সম্ভব এই বিশেষ চূর্ণ দিয়ে। এর জন্য দরকার হবে – নিমের চূর্ণ, লবঙ্গের চূর্ণ, হলুদের গুঁড়া, সৈন্ধব লবণ ও বেকিং সোডা। এগুলি চূর্ণ আকারে না পেলে নিজেরাই গুঁড়ো করে নিতে পারেন এবং একটি ডিব্বায় সংরক্ষণ করে রাখুন।
টুথপাউডারের মতোই এই আয়ুর্বেদিক চূর্ণ ব্যবহার করা যেতে পারে দাঁতের পরিষ্কারে। চাইলে আঙুলে নিয়ে দাঁত মাজতে পারেন, অথবা নরম ব্রাশে লাগিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, ঘষার কাজটা খুবই ধীরে ও কোমলভাবে করতে হবে। প্রতিদিন ২-৩ মিনিট সময় নিলেই যথেষ্ট।
দাঁত পরিষ্কারের পর মুখে পানি দিয়ে ভালো করে কুলি করতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ খুব ঠান্ডা বা খুব গরম কিছু খাবেন না, যাতে দাঁতের সংবেদনশীলতা না বেড়ে যায়। খাবার খাওয়ার পরেও লক্ষ্য রাখুন যেন দাঁতের ফাঁকে কিছু আটকে না থাকে, কারণ সেখান থেকেই আবার পচন শুরু হতে পারে।
এই আয়ুর্বেদিক চূর্ণ ব্যবহারের সময় কোনও ধরনের সাধারণ টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না। এটি একটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়, তাই কোনও রাসায়নিক বা ফ্লেভার যুক্ত পেস্ট এড়িয়ে চলুন।
এই চূর্ণ নিয়মিত ব্যবহার করলে কয়েক দিনের মধ্যেই দাঁতের ব্যথা, মাড়ির পচন এবং মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। এটি ব্যবহারে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেই জানান আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা।
তথ্য অনুযায়ী, এই চূর্ণ তৈরি করতে আপনার খরচ হবে খুবই কম, প্রায় ১০ টাকার মধ্যেই এর উপাদানগুলি সংগ্রহ করা সম্ভব। এটি যেমন সাশ্রয়ী, তেমনি কার্যকর।
প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হওয়ায় এই চূর্ণ মুখের ভেতরের সংবেদনশীলতা বজায় রাখে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা প্রতিরোধ করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে সহজে, নিরাপদে ও খুব কম খরচে।
দিল্লির আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. বিকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, "এটি কোনও সাধারণ চূর্ণ নয়, বরং মুখের স্বাস্থ্য রক্ষার একটি কার্যকর আয়ুর্বেদিক বিকল্প। নিয়মিত ব্যবহারে কেবল দাঁতই নয়, মাড়িরও স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং মুখের দুর্গন্ধও কমে।"
শহীদ